কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় বিশ্বে বাংলাদেশের সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি দিন-রাত পরিশ্রম করে যে বাংলাদেশটাকে সম্মানের স্থানে নিয়ে এসেছিলাম, সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিলো। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখের। গতকাল সোমবার গণভবনে ছাত্রলীগের নেত্রীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের আন্দোলন করতে এবং আমাকে খাটো করতে গিয়ে বাংলাদেশটাকে কোথায় টেনে নামালো সেটা একবার চিন্তা করে না। এদের মধ্যে যদি এতটুকু দেশপ্রেম থাকতো, দায়িত্ববোধ থাকতো- তাহলে এটা করতো না।’
আন্দোলনকারীদের কারা অর্থ দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এরা এত টাকা কোথা থেকে পায়? কোথা থেকে পেলো? প্রতিদিন তাদের আন্দোলনের খরচ, কে দিয়েছে সে টাকা?’
আন্দোলনের ফসল হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয়া বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করি, সেগুলো নষ্ট করে দেয়া। সেটাই করা হলো। এ আন্দোলনের ঘাড়ে চেপে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা সুযোগ পেয়ে গেলো। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে- অপরাধটা কী করলাম? মানুষের জীবনমান উন্নত করা? মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করা? চিকিৎসার ব্যবস্থা করা? বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা সবাইকে হত্যা করেছে। তারপরেও সেই কষ্ট বুকে নিয়ে এসে শুধুমাত্র এই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, মানুষ একটু ভালো থাকবে। মানুষ উন্নত জীবন পাবে। মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি, সম্মানের সঙ্গে চলতে পারি। সেই সম্মানটা তো আমি এনে দিয়েছি বাংলাদেশকে। এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে যেখানে যাবে বাংলাদেশ শুনলে সমীহ করে এবং মর্যাদার চোখে দেখে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের ডিজিটাল সিস্টেম আমারই করে দেয়া। হাতে হাতে মোবাইল ফোন তো আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে।’ যে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষ ব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করে, সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কাজগুলো সেগুলো একে একে তারা ধ্বংস করে ?দিলো। কার স্বার্থে তারা এটা করেছে সেটাই প্রশ্ন।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন জটের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পরবর্তী ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত, এমনকি আমরা সরকারে আসার পর পর্যন্ত প্রতিদিন বোমা, গুলি, মারধর, লাশ, সেশন জট এ অবস্থা ছিল। ১৯৯৬ সালের পরে আমরা শিক্ষা কার্যক্রমে যে রিফর্ম নিয়ে আসি, তাতে আমাদের ডিগ্রিগুলো আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে।’