জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগত’ গণজাগরণ মঞ্চের
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। গতকাল মঙ্গলবার গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের সই করা বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নজিরবিহীন সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও নৃশংসতা চালানোর অভিযোগে সরকার নির্বাহী আদেশে বুধবারের মধ্যেই জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে বলে গত মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী বলেছেন।
গত সোমবার ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে এ বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই আইনমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তির বিচার হলেও দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবি ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ থেকেও তোলা হয়েছিল। গোলাম আযমের মামলার রায়ে আদালত জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল দল’ আখ্যায়িত করার পর দাবিটি আরো জোরালো হয়ে ওঠে।
২০১৩ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপর গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষে সংগঠনটি নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হলেও তা আজও হয়নি। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। সর্বোচ্চ আদালতেও হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। বিবৃতিতে ইমরান এইচ সরকার বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া গণজাগরণ মঞ্চের ছয় দফা দাবির মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় পর এই দাবি মেনে নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার শুভবুদ্ধি যে সরকারের উদয় হয়েছে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছে গণজাগরণ মঞ্চ। কিন্তু সরকারের এই দীর্ঘ কালক্ষেপণ দেশকে অরাজকতার যে প্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে, তার ভুক্তভোগী হচ্ছেন জনগণ। ইমরানের ভাষ্য- এটা সত্যিই আশ্চর্যের যে, আদালতের রায়সহ গণজাগরণ মঞ্চের সপ্রমাণ দাবির পরও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও জঙ্গীবাদের বিভৎসতা বুঝতে সরকারের এত দীর্ঘসময় লাগল। উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে যখন এই ‘যুদ্ধাপরাধী সংগঠন’টির নিবন্ধন বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন, তখনই তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে তা আরো কার্যকর হত। গণজাগরণ মঞ্চের দাবি উত্থাপনের দীর্ঘ ১০ বছর পর জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও দেশের নানা স্তরে এমনকি খোদ সরকারি দলের মধ্যেও জামায়াত-শিবির ও তাদের জঙ্গিমনস্কতার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি করছে গণজাগরণ মঞ্চ। বলা হয়েছে বিবৃতিতে।