ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উখিয়ায় চার দিন টানা ভারি বর্ষণ

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৫ হাজার মানুষ

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৫ হাজার মানুষ

কক্সবাজারের উখিয়ায় চার দিন টানা ভারি বর্ষণ পাহাড়ি ঢল ও সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে অন্তত ৪০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৫ হাজার মানুষ। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে, গ্রামীণ সড়ক লন্ডভন্ড, কালভার্ট বিধ্বস্ত, গাছপালা এবং পানের বরজ নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, জালিয়া পালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, ঘাটঘরপাড়া, পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌবাজার, কুলালপাড়া, মনির মার্কেট, পাগলির বিল, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল, রত্না পালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকার পাডা, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিলসহ অন্তত ৪০টি গ্রাম পানি তলিয়ে গেছে। চারিদিকে পানি আর পানি। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। জনগণের চরম দুর্ভোগ বেড়েছে। জালিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম সৈয়দ আলম জানান, সমুদ্র উপকূলীয় ডেইল পাড়া, নম্বরি পাড়া ও ঘাটঘর পাড়ায় কয়েকশো পরিবার পানিতে আটকা পড়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের উখিয়া সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ নুর মোহাম্মদ শিকদার জানান, ৪ দিন ধরে প্রবল বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে মাটির রাস্তাগুলো লন্ডভন্ড এবং কালভার্ট বিধ্বস্ত হওয়ায় যাতায়াতব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা ও পানের বরজ ভেঙে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, রুমখা চৌধুরী পাড়া, বউ বাজার, পাগলির বিল, বড়বিল মনি মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। সবজি খেতসহ আমন মৌসুমের বীজতলা পানিতে ভেসে গেছে। স্থানীয় মৎস্য চাষিরা জানান, মৎস্য ঘেরে ও পুকুরে পানি ঢুকে লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বহু প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভেরিফাই ফেইসবুকে এক জরুরি বার্তায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনগণকে নিরাপদ স্থানে কিংবা পার্শ্ববর্তী সাইক্লোনসেন্টার আশ্রয় নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। গ্রামীন অভ্যন্তরীণ অন্তত ২০টি কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান, প্রবল পানির স্রোতে অসংখ্য বীজ তলা ও পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী তার ভেরিফাই ফেইসবুকে পানিবন্দী হওয়া পরিবারের ছবি পোষ্ট দিয়ে বলেছেন ২০ টি গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নেমে এসেছে জনদুর্ভোগ। দুই দিন ধরে অনাহারে রয়েছে বানভাসি মানুষ। তিনি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। স্থানীয় নাগরিক সমাজের অভিযোগ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির প্রকল্প নিয়ে লাখ লাখ টাকা সভা সেমিনারের নামে খরচ করলেও বন্যায় পানিবন্দি মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এটি খুব দুঃখজনক। জালিয়া পালং ও পালংখালী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন জানান, জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত