ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী জেলার ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নামতে শুরু করেছে। মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। গত জুলাইয়ের প্রথম সাপ্তাহের প্রথম বন্যার রেশ কাটতে না কাটতে আরেকবার দুর্ভোগে পড়েছেন বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, দুইদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১৭টি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এবার পরশুরামের ১৫টি ও ফুলগাজীতে দুইটি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বাঁধ ভেঙে ৭৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এ দুই উপজেলার অন্তত ২৮ হাজার পরিবার। পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা জানান, উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। মুহুরী নদীর পানি কমে যাওয়ায় বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১৩ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৮০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১০০ টন চাল মজুদ রয়েছে। অন্যদিকে, পানি কমতে শুরু করায় ফুলগাজীতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া জানান, উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। বন্যায় ছয়টি ইউনিয়নের ৪৮টি গ্রামের প্রায় ৭ হাজার ৮০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে, তবে বর্তমানে অনেক গ্রাম থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। বন্যা দুর্গত মানুষের মধ্যে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ ও ৫০ টন চাল উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। আরো ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১৮ টন চাল মজুদ রয়েছে। উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীতে ২১টি ও পরশুরামের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়।

বন্যা ক্ষয়ক্ষতির চিত্র বেশি দেখা গেছে ফুলগাজীতে। পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার জানান, মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদীর দুইপাশে ১২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। গত মাসে বাঁধের ১১টি স্থানে অন্তত দেড়শ মিটার ভেঙে গিয়েছিল। এর মধ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেগুলো মেরামত করা হয়েছে। ফের নতুন করে যেগুলো ভাঙছে পানি নেমে গেলে মেরামত করা হবে। এক মাসের ব্যবধানে পর-পর দ্বিতীয় দফা বন্যায় ফের বিপর্যয়ের মুখে ফুলগাজী ও পরশুরামের কৃষি, মৎস্যসহ অবকাঠামো খাত। প্রথম বন্যার ধকল না কাটতে দ্বিতীয় দফার বন্যার কবলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন এ অঞ্চলের কৃষক ও মৎস্য চাষিরা। এছাড়া বন্যায় যোগাযোগসহ অন্যান্য অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।