ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে দ্রুত দেশ ছেড়ে ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নেন হাসিনা। গতকাল সকালে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের এক্স হ্যান্ডলে করা একটি পোস্ট রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পোস্টটি থেকে বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেওয়ার পর থেকে মা ও মেয়ের মধ্যে এখনও দেখাই হয়ে ওঠেনি! ওই টুইটে সায়মা ওয়াজেদ লিখেছেন, এই কঠিন সময়েও আমার মাকে দেখতে পারছি না, তাকে জড়িয়ে ধরতে পারছি না... আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।
এদিকে, বিবিসি জানতে পেরেছে, সায়মা ওয়াজেদ মঙ্গলবারই দিল্লি এসে পৌঁছেছেন। সে ক্ষেত্রে দিল্লি আসার পরেও কেন তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, না কি তাকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দেখা করার অনুমতি দেয়নি, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত সোমবার ৫ আগস্ট যখন নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়তে হয়, তখন সায়মা ওয়াজেদ থাইল্যান্ডে ছিলেন। সায়মা ওয়াজেদ বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের পদে রয়েছেন, যার প্রধান কার্যালয় দিল্লিতে এবং সেই সুবাদে তিনি আজকাল বেশিরভাগ সময় দিল্লিতে অবস্থান করেন। যতদূর জানা যাচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার ও আলোচনা সভায় যোগ দিতে সায়মা ওয়াজেদ ব্যাঙ্ককে গিয়েছিলেন। এছাড়াও তার সে দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরো কিছু কাজ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে হিন্ডনে অবতরণ করার ঘণ্টাকয়েক পরেই তিনিও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন বলে বিবিসি জানতে পেরেছে। দিল্লিতে ভারতের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এদিন সকালে বিবিসি বাংলাকে বলেন, সায়মা ওয়াজেদ যেহেতু হু’র আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার একজন কর্মকর্তা- সে কারণেই হয়তো বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতে আসা শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দেখা হয়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, প্রথম কথা হলো উনি দিল্লিতে কি না, তা আমি জানি না। আর যদি থেকেও থাকেন, উনি শেখ হাসিনার মেয়ে তো বটেই; কিন্তু আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে সায়মা ওয়াজেদের আরো একটা পরিচয়ও আছে, আর সেটাই হয়তো এখানে দেখা করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করছি’, বিবিসিকে জানান ওই কর্মকর্তা। ভারত সরকার অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার ‘স্ট্যাটাস’ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে দেশটির পার্লামেন্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিবৃতির পর থেকে আর কোরো মন্তব্য করেনি।