ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য, মাজার, উপসনালয় ও স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। একই সঙ্গে জনবিরোধী এসব ঘটনা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে দলটি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এ দাবি জানান।
তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে স্বৈরশাসনের অবসান হলেও এই সুযোগে বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। যা ছাত্র আন্দোলনের বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে পারে। তারা আরো বলেন, স্বৈরশাসকদের ইতিহাস মুছতে গিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সফলতোকে পুঁজি করে এক শ্রেণির ষড়যন্ত্রকারীরা ভাস্কর্য ভাঙতে গিয়ে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৭ বীর শ্রেষ্ঠকে মুছে দিতে চাচ্ছে। হেফাজতের নামে কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে রাজধানীর ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরকে শহীদি চত্বর বানানোর চেষ্টা, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার ভাঙছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর কোনোভাবেই শুভ লক্ষণ নয়। নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অর্জিত বিজয় ক্রমেই ম্লান করতেই বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীরা ডাকাতি, লুটতরাজ শুরু করেছে। জনজীবনে আতঙ্ক ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিরা চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা লাইব্রেরি, সংগীত চর্চার স্থাপনায় হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংগীতশিল্পী রাহুল আনন্দকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া, তার এত বছরের সংগীত যন্ত্রের বিশাল সংগ্রহশালা লুট করা, আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা।
বিবৃতিতে ঢাকাসহ সারা দেশের ট্রাফিক সিস্টেমের দ্বায়িত্ব সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য ছাত্রসমাজকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অর্জিত বিজয়কে ধরে রাখতে সামাজিকভাবে প্রতিটি গ্রাম মহল্লায় দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে ছাত্র জনতার বিজয় নস্যাৎকারী দুষ্কৃতকারীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, বহু মত ও পথের বাংলাদেশে ভাস্কর্য থাকবে। মন্দির-মসজিদণ্ডগির্জা-প্যাগোডা থাকবে। মাজার থাকবে-বাউল-ফকিরসহ সমস্ত সংস্কৃতি থাকবে। এই দেশ সব ধর্মের, সব জাতির, সব মানুষের দেশ।