ঝিনাইগাতীতে পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীদের হামলায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আরএম সেলিম শাহী, ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পূর্বশত্রুতার জের ধরে চাচার ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে গেছে ভাতিজারা। এ ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ডেফলাই গ্রামের বেদে পল্লিতে। জানা গেছে, বেদে পল্লির জামাল মিয়া ও নুরু মিয়া সহোদর দুই ভায়ের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। জামাল মিয়ার মেয়ে সেলিনার বিয়ে হয় জামাল মিয়ার সহোদর ভাই নুরু মিয়ার ছেলে জিতুর সাথে। ওই ঘরে সেলিনা ২ সন্তানের জননী হয়। কিছুদিন আগে জিতু ও সেলিনার মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বেদে সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটলে সন্তানরা থাকবে তার বাবার কাছে। কিন্তু সেলিনা তাদের সংস্কৃতি না মেনে তার দুই ছেলে তার কাছে রাখতে সম্প্রতি আদালতের আশ্রয় নেয়। আদালত দুই সন্তানের দ্বায়িত্ব দেয় সেলিনাকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিতুর পরিবারের লোকজন সেলিনার পরিবারের লোকজনের সাথে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, গত জুলাই মাসে জিতুর ছোট ভাই রাসেলের মেয়ে মিথিলা (১২) লুকিয়ে রেখে সেলিনার পরিবারের সদস্যেরা থানায় মামলা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে মিথিলাকে বের করে নিয়ে আসে জিতুর মিয়ার পরিবার। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে গত ৬ আগস্ট হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা দুই পরিবারের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু জিতুর পরিবারের লোকজন উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার মানতে নারাজ। এ নিয়ে জিতুর পরিবারের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিল। শনিবার দুপুরে জিতুর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী দা-লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সেলিনার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা ৪টি ঘরের আসবাবপত্র টিভি, ফ্রিজসহ ঘরের সব মালামাল, হাড়িপাতিল ভাঙচুর করে। ঘরের বেড়া কুপিয়ে তচনচ করে। ৫ লাখ নগদ টাকা ও ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে গিয়ে সেলিনা, সাবিনাও পপিসহ ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রকিবুল ইসলাম রোকন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তারা জিতুর পরিবারের লোকজনকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে জিতুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার মানি না। আগের ঘটনার বিচার হয় নাই। তাই আমরা এসব করেছি। প্রয়োজনে আরো করব। সেলিনার বাবা জামাল মিয়া বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না থাকায় আমাদের পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।