শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন এবং আল্টিমেটামের মুখে পদত্যাগ করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। পদত্যাগপত্রে ড. সৌমিত্র শেখর উল্লেখ করেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে আমি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ প্রসঙ্গত, ড. সৌমিত্র শেখর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ৬ আগস্ট থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যক্তিদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। তাদের প্রধান দাবি ছিল, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং সাত দফা দাবি পূরণ। শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন। এ ছাড়াও, দলীয় শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানায়। পরে ৭ আগস্ট প্রশাসনিক কিছু ব্যক্তির পরিবর্তন আনা হয় এবং উপাচার্য নিজেও বিভাগের দায়িত্ব পরিবর্তন করে মার্কেটিং বিভাগের প্রধানের পদ থেকে সরে অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যায়। গত ৯ আগস্ট শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। গত ১১ আগস্ট নজরুল ভাস্কর্যের পাদদেশে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা। পরদিন ১২ আগস্ট, শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ শুভ উপাচার্যকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। গতকাল ১৪ আগস্ট শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাংলো, শিক্ষক ডর্মেটরি এবং বিভিন্ন অনুষদ ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ অবস্থায় পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ড. সৌমিত্র শেখর পদত্যাগ করেন।