ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অস্তিত্ব রক্ষার্থে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক ও সাবেক বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরসহ যারা স্বৈরাচার সরকারকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও বাংলাদেশ স্বতন্ত্র পার্টি ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এ দাবি জানান।
সমাবেশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাতনি অ্যাডভোকেট নুরতাজ আরা ঐশী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- ১. দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী স্বৈরাচারী সরকারের সব দোসরদের গ্রেপ্তার করে বিচার করতে হবে। ২. হাসিনার জুলুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের থানাভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করে টপ টেন ঘটনাকে ৪৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ৩. হাসিনা কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়গুলো জাতীয়ভাবে প্রচার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইমেজ বিল্ডিং করতে হবে। ৪. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনের পূর্বে একশতাংশ ভোটারদের সমর্থন নেয়ার যে বিধান রয়েছে তা বাতিল করতে হবে। ৫. ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প ও কলমিলতা বাজারের বিষয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দীর্ঘদিনের ঝুলিয়ে রাখা দাবির বিষয়টির উপর পদক্ষেপ নিয়ে দ্রুত সমাধান করতে হবে। ৬. সরকারি টাকা ছাড়াই সাধারণ বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য এনএসপিডিএল’র গৃহীত পুনর্বাসন প্রকল্পসহ কমপক্ষে ১০০টি প্রকল্প জরুরি ভিত্তিতে চালু করতে হবে। ৭. ছাত্র-জনতার চলমান আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন সেই তালিকা করে তাদের জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন করতে হবে। এবং ৮. ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, লুটপাটকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সমাবেশে নুরতাজ আরা ঐশী বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভিন্নমত ও বিরোধীদলকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এবার তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
এ সময় সমাবেশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের সন্তান মো. আব্দুর রহিমসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।