বিএনপি যেখানে সময় দিচ্ছে, এত চাপ সৃষ্টি করছেন কেন
বললেন আলাল
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিভিন্ন দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ১৭ বছরের জঞ্জাল ১৭ দিনে সমাধান হবে না। প্রেসক্লাবে আগে বসেছিলেন, দুদিন পর পর পিটিয়ে উঠিয়ে দেয়া হতো। শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতেন। এসব আমরা দেখেছি। বিএনপি যেখানে সময় দেয়ার কথা বলছে, আপনারা এত চাপ সৃষ্টি করছেন কেন? গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ছাত্র-জনতার গণহত্যার দায়ে খুনি হাসিনার বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলেছি, যৌক্তিক একটা সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেদিন পর্যন্ত কোনও সংঘর্ষ, কোনও কুকীর্তিতে যেন আমরা না যাই।’ আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করার বিভিন্ন মামলা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই শাসনের অবসান হয়েছে। প্রথমে ছাত্ররা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। পরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই। যারা এতে অবদান রেখেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, বিএনপির ২০৪ জন নেতাকর্মী এই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, হলি আর্টিজানে হত্যা, শোলাকিয়ায় হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড নেই; যা বিগত সরকার করেনি। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান- সবাইকে নির্যাতন করেছে। জায়গা দখলের জন্য সাঁওতালদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। রামু, নাসিরনগরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ২০০ শ্রমিকের জীবন যাওয়ার পর মন্ত্রী এসে বলেছে, বিএনপি বিল্ডিং ধরে নড়াচড়া করেছে। হাসিনা এমনভাবে কথা বলতো যে, তার মতো দাম্ভিক আর দুনিয়াতে নেই। চট্টগ্রামে গিয়ে জনসভায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা কি শাড়ি-চুড়ি পরে বসে থাকেন, একটা লাশ পড়লে ১০টা লাশ পড়তে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, ‘একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও এতদিন আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের মতামত প্রকাশ করতে পারতাম না। ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বিগত ১৭ বছরের জন্য একটি লোক দায়ী, বিচারপতি খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করার ফলে যত লোক খুন-গুম হয়েছে, পাচার হয়েছে, তার সব দায় খায়রুল হককে নিতে হবে। তাকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে কী উদ্দেশ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে এত ঝামেলা করেছে তা জানতে হবে। জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু এবং ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল প্রমুখ।