দেশের ১১ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে বৃষ্টি কমার কোনো সুখবর দিতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী তিন দিন বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন। গতকাল শুক্রবার এক বিফ্রিংয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের যে পরিস্থিতি বিশেষ করে পূর্বাঞ্চল বা উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দেশের ভূখণ্ডের ভেতরে যে বৃষ্টিপাত, সেটা উন্নত হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। ফেনীতে যে অবস্থা, আমরা কিন্তু আমাদের অফিস থেকে রেকর্ডই নিতে পারি নাই। আগামী সোমবারের পর দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসবে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বন্যায় মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাত জেলায় দুই নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের ৭৭ উপজেলার ৫৮৪টি ইউনিয়ন বা পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আকস্মিক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এসব ১১ জেলার ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র ফেনী, কুমিল্লাসহ পাঁচ জেলায় ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার তথ্য দিলেও বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতেও বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা দেখছেন না আবহওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এখন যেরকম হচ্ছে সেরকমই হবে। আমরা আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলেছিলাম এসব এলাকায় স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। এ ছাড়া কক্সবাজারে ১৫১, চট্টগ্রামের আমবাগানে ১৪৩, রাঙামাটি ৯৭, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এবং লক্ষীপুরের রামগতিতে ৯০ মিলিমিটারসহ প্রায় সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।