কেউ আসছেন রিকশা করে কেউবা পায়ে হেঁটে, সবার হাতে ত্রাণ সামগ্রী। কেউবা আবার মাথায় করে ত্রাণ নিয়ে টিএসসির ভিতরে ছুটছেন। দেখে মনে হয়েছে কারো চোখেমুখে নেই কোন ক্লান্তি, প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠেছে আনন্দের প্রতিচ্ছবি। গতকাল এমনই চিত্র দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায়। সরেজমিনে গতকাল বিকালে দেখা যায়, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নিজের ছোট্ট ব্যাংকটি নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে টিএসসিতে এসেছে ১০ বছর বয়সী ইহান। শুধু ইহান নয়, করপোরেট পেশাজীবী থেকে শুরু করে দিনমজুর-রিকশাচালকসহ নানা বয়স, শ্রেণি, পেশার মানুষ নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন সেখানে। একের পর এক গাড়ি, ট্রাক, ঠেলাগাড়ি আসছে, নামানো হচ্ছে শুকনো খাবার, খেজুর, ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন, পানিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আর এসব সামগ্রী গাড়ি থেকে নামিয়ে টিএসসির ভিতরে নিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। টিএসসির প্রবেশমুখ থেকে ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে এক হাত থেকে অন্য হাতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দেখা যায়, ছাত্র-জনতার দেয়া ত্রাণে টিএসসির ভিতরের ক্যাফেটেরিয়া, গেমস রুম ভর্তি হয়ে যাওয়ায় ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দা ও টিএসসি অডিটোরিয়ামে রাখা হয় এসব ত্রাণ। এ ছাড়াও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্রভাবে ক্যাম্পাস এলাকাসহ আবাসিক হলে হলে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন। বিভাগে বিভাগেও শিক্ষার্থীরা একই ধরনের কর্মসূচি চালাচ্ছেন। এদিকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত নগদ ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা সংগ্রহ হয়েছে। তবে গতকাল বিকাল ৫টায় নগদ অর্থের পরিমাণ জানান হয় ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৭২ টাকা। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণত্রাণ গ্রহণ কার্যক্রম চলমান ছিল।