জেলেরা ইলিশের চেয়ে দেশীয় মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে পাচ্ছে

প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

অনাবরত বৃষ্টি ও বন্যার পানি চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে চাষকৃত জলাশয়ে প্রবেশ করে এসব জলাশয়ের মাছ চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ভেসে গেছে। এতে করে মাছ চাষিদের লাখণ্ডলাখ টাকার ক্ষতিসাধিত হয়েছে। এখন বিভিন্ন প্রকার চাষিদের চাষ করা হাজার-হাজার একর জলাশয়ের ভেসে যাওয়া মাছ জেলেরা আনন্দের সাথে নদীতে আহরণ করতে পারছে। চাঁদপুরের জেলেরা ইলিশের ভরমৌসুমে ইলিশ না পেয়ে হতাশায় দিন কাটলেও এখন এসব শত শত জেলেরা ইলিশের চেয়ে দেশীয় জাতির মাছ বেশি পাচ্ছে। তাতে জেলেরা বিগত দিনের হতাশায় থাকলেও এখন তাদের হতাশা কেটে তারা আনন্দ উপভোগ করতে দেখা যাচ্ছে। এখন জেলে পাড়ায় হঠাৎ আনন্দের বন্যা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। তারা যে পরিমাণ মাছ আহরণ করছে তাতে তারা লাখ লাখ টাকার দেশীয় মাছ বিক্রি করতে পারছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় চলমান টানা বৃষ্টিপাতের কারণে চাঁদপুরের বহু ঘের ও পুকুর প্লাবিত হয়ে চাষের মাছ ভেসে গেছে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে। সেই মাছ নদী থেকে উৎসাহের সঙ্গে ধরছেন সাধারণ মানুষ ও শত শত জেলে। গত চার দিন ধরে জাল ও ফাঁদ দিয়ে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরার ব্যাপক উৎসব চলছে সাধারণ মানুষ ও জেলেদের মধ্যে। এসব মাছ কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশের আড়তসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়, বিভিন্ন বাজারে ও রাস্তার পাশে।

গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত সদর উপজেলার পুরান বাজার রনাগোয়াল, হরিসভা, দোকানঘর, বহরিয়া, হরিণা ও চান্দ্রা বাজার মেঘনা সংলগ্ন জেলে পল্লিগুলোতে দেখা গেছে ইলিশসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরতে নেমেছে শত শত জেলেরা নৌকা নিয়ে। জেলার ডাকাতিয়া নদী সংযুক্ত সদর, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলার বহু সংখ্যক মাছের ঘের, পুকুর ও জলাশয়ের মাছ উজান থেকে নেমে আসা বানের পানির স্রোতে গিয়ে মিলছে পদ্মা-মেঘনা নদীতে। এসব মাছ নেমে যাওয়ার গতিপথে নদী ও খালের বিভিন্ন স্থানে লোকজন মাছ শিকার করছেন। মাছ ধরার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাব বিক্রিও করতে যাচ্ছে আনন্দের সাথে। ক্রেতারা ও কম দামে এ সব মাছ ক্রয় করতে পেরে আনন্দের সাথে ক্রয় করে উৎসাহ উপলব্দি করতে দেখা যায়। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের পাড়ামহল্ল­া ও মেঘনা উপকুলীয় আড়ত হরিণা এবং রনাগোয়াল ঘাটে দেশীয় প্রজাতির রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, সরপুটি, সিলভার কাপসহ বহু প্রজাতির মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর এসব মাছ অন্য সময়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা ধরে। হরিণা ফেরিঘাট মাছের আড়তের ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, নদীতে ইলিশ কম। তবে বানের পানিতে আসা দেশীয় প্রজাতির মাছে এখন ইলিশের আড়ত চাঙা দেখা যায়। দাম কম হওয়ায় একেক ক্রেতা ৫ থেকে ১০ কেজি করে মাছ ক্রয় করছে। তবে পানি কমলে এই মাছ আরো বেশি ধরা পড়বে বলে জেলেদের ধারণা। এদিকে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সকালে জোয়ারের সময় পদ্মা-মেঘনায় পানির লেভেল ছিল ৩.৫ মিলিমিটার। ভাটায় আরো কমে যাবে। বিপৎসীমার অনেক নিচে আছে পদ্মা-মেঘনার পানি লেভেল।