কুমিল্লার দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ নবম শ্রেণির ছাত্র আমিনুল ইসলাম সাব্বির মারা গেছেন। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দেবিদ্বার পৌরসভার ভিংলাবাড়ি এলাকায় নানার বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। সাব্বির পার্শ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে। সে ভিংলাবাড়ি গ্রামে নানার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। এদিকে সাব্বির গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় তার মামা নাজমুল হক বাদী হয়ে দেবিদ্বারের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুলসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করে গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের আদেশে শনিবার দেবিদ্বার থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে বলে থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউ মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এতে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে আমিনুল ইসলাম সাব্বির (১৪) মিছিলে অংশগ্রহণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে সাব্বিরের মাথায় ও শরীরে বুলেটবিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। মামলার বাদী সাব্বিরের মামা নাজমুল হক জানান, দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ঢাকার একটি হসপিটালে চিকিৎসা দেওয়ার পর গত ৩ দিন আগে ওই হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দিলে বাড়িতে আনা হয়। শনিবার সকালে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, কিন্তু তাকে আর বাঁচানো যায়নি। সাব্বিরের মা রিনা আক্তার বলেন, সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে সোচ্চার ছিল তার ছেলে সাব্বির। প্রতিদিনই পরিবারের বাঁধা উপেক্ষা করে সে আন্দোলনে অংশ নিতো। সন্তানকে হারিয়ে নির্বাক তার মা, স্বজন ও সহপাঠিরা।