করোনাভাইরাসের এক্সইসি নামের অতি-সংক্রামক নতুন একটি ধরন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার এই ধরন শিগগিরই শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনার নতুন ওই ধরনটি জার্মানিতে প্রথম শনাক্ত হয় গত জুনে। এরপর থেকে এক্সইসি ধরনটি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ধরনটি করোনার অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপগোত্রীয়। তবে এক্সইসি ধরনে নতুন করে রূপান্তর ঘটেছে। এর ফলে চলতি শরতে ইউরোপে করোনার নতুন এই ধরনের ব্যাপক বিস্তারের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও করোনার টিকা এখনও গুরুতর ক্ষেত্রে এই ধরনকে প্রতিরোধে সহায়তা করবে। করোনার আগের উপধরন অমিক্রনের কেএস.১.১ এবং কেপি.৩.৩ এর মিশ্রণে শঙ্কর ধরনে রূপ নিয়েছে এক্সইসি। বর্তমানে ইউরোপজুড়ে এই ধরনের সংক্রমণের ব্যাপক আধিপত্য দেখা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, করোনার নতুন ধরনটি এখন পর্যন্ত পোল্যান্ড, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, ইউক্রেন, পর্তুগাল এবং চীনসহ অন্তত ২৭টি দেশের ৫০০ নমুনায় শনাক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ডেনমার্ক, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং নেদারল্যান্ডসে এই ধরনের প্রকোপ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জেনেটিক্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ফ্রাঁসোয়া ব্যালোক্স বিবিসিকে বলেছেন, সাম্প্রতিক অন্যান্য কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এক্সইসি ভ্যারিয়েন্টের মানুষের মাঝে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে। তারপরও করোনার ভ্যাকসিনগুলো এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভালো সুরক্ষা দিতে পারে। আর শীতকালে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে উচ্চগতি দেখা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চ ট্রান্সলেশনাল ইনস্টিটিউটের পরিচালক এরিক টোপোল বলেছেন, এক্সইসির সংক্রমণ মাত্র শুরু হচ্ছে। এক্সইসির ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগে নতুন এই ধরনটি কয়েক মাস সময় নিতে চলেছে।
নতুন ধরন এক্সইসির উপসর্গ কী?
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন এক্সইসির উপসর্গগুলো আগের সব কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্টের মতোই। যার মধ্যে রয়েছে জ্বর, গলাব্যথা, কাশি, ঘ্রাণশক্তি হ্রাস, ক্ষুধামন্দা এবং শরীরে ব্যথা। এই ধরনটি অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের একটি উপ-পরিবারের সদস্য হওয়ায় ভ্যাকসিন ও বুস্টার ডোজগুলো দেওয়া হলে তা গুরুতর অসুস্থতা এবং হাসপাতালে ভর্তির বিরুদ্ধে যথেষ্ঠ সুরক্ষা দেবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) জনগণকে স্বাস্থ্যকর স্বাস্থ্যবিধির চর্চা এবং পরিষ্কার বাতাস গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া গবেষকরা নতুন এই ধরনের উপসর্গগুলো আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য এক্সইসিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।