খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গতকাল রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার কমিশন জানায়, দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ‘দোকান, বাড়িঘরে আগুন’ শীর্ষক প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন এবং একই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে বর্ণিত সংঘর্ষের ঘটনা অনভিপ্রেত। এ ঘটনার জেরে পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটিতে সংঘাত ছড়িয়ে যাওয়ার যে খবর পাওয়া গেছে তা আরো উদ্বেগজনক। এতে বলা হয়, ঘটনাসমূহে হতাহতের খবরসহ ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপ্রীতিকর এ পরিস্থিতি দ্রুততার সঙ্গে স্বাভাবিক করার জোরালো প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা সমীচীন বলে কমিশন মনে করে। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমটোতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে লারমা স্কয়ার এলাকায় এই সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দোকান ও ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সুয়োমটোতে আরো বলা হয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ি শহরের নোয়াপাড়া এলাকায় মোহাম্মদ মামুন নামের এক ব্যক্তিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় পরে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার সূত্র ধরে ওই দিন বিকাল ৫টার দিকে দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বাঙালিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ৫টার দিকে ৩০০ থেকে ৪০০ বাঙালি জামতলি ও বোয়ালখালী বাজারের দিক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পাহাড়িরা বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে অন্তত তিনজন আহত হন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের পাশের প্রায় ৩৭টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়া হয়। খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালি সংঘাতের রেশ পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটিতেও ছড়িয়েছে মর্মে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানা যায়। সুয়োমটোতে কমিশন জানায়, পার্বত্য এলাকাসমূহের শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার উদ্যোগ গ্রহণসহ ঘটনার পেছনে প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে শনাক্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে বলা হয়েছে।