৪৯ দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা শিশুটি গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। রাতুল বগুড়া উপশহরের পথ পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ওই এলাকার মুদি দোকানি জিয়াউর রহমানের ছেলে। রাতুলের বাবা জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমকে ছেলের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, ৫ আগস্ট সকালে নাশতা না করে মায়ের নিষেধ সত্ত্বেও বোন জেরিন সুলতানা ও ভগ্নিপতি আমির হামজার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যায় রাতুল। একটা সময় মিছিল নিয়ে তারা বগুড়া সদর থানার অদূরে ঝাউতলার কাছে পৌঁছায়। তখন বৈষম্যবিরোধী মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে আহত হয় রাতুল।
ঘটনা প্রসঙ্গে রাতুলের বড় বোন জেরিন জানান, তার পাশেই ছিল রাতুল। হঠাৎ রাতুলের মাথায় চারটি ছররা গুলি লাগে। একটি গুলি
রাতুলের বাম চোখের মধ্য দিয়ে মাথায় ঢুকে যায়। এরপর আরো অসংখ্য গুলি লাগে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। অজ্ঞান অবস্থায় তার বোন জেরিন ও তার ভগ্নিপতি তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতলে নিতে বলেন। পরে ঢাকায় নেয়ার পর তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে মগজের ভেতর থেকে একটি গুলি বের করেন চিকিৎসকরা। এদিকে রাতুলের জন্য কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, রাতুল বেঁচে ফিরলেও চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর বেঁচে ফেরা হলো না রাতুলের। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে না ফেরার দেশে চলে যায় শিশুটি।