শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ায় ‘আল্লাহর রহমত’ দেখছেন জিএম কাদের

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের কথা তুলে ধরে জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে এটা ‘আল্লাহর রহমত’। শেখ হাসিনার পতন না হলে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম হতো। দেশে মাত্র একটি দলই থাকত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, এদেশের ছাত্র-জনতা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় আন্দোলনের নজির নেই। আন্দোলনে এত নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞের ইতিহাসও নেই আমাদের দেশে। আমাদের বীর সন্তানরা জীবন দিয়ে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করেছে, যা আমরা পারিনি। শেখ হাসিনার পতন না হলে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম হতো। দেশে মাত্র একটি দলই থাকত। ২০১৪ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল। আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে সিএমএইচে আটক করা হয়। তার নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই । আমিসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নির্বাচন বর্জন করি। ২০১৪ সালের সংসদে আমি যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সংসদে যেতে বাধ্য করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাসহ বেশ কিছু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব দলই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আমরাও সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের দল মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। একটি গোষ্ঠীকে আমাদের দল ও প্রতীকের নামে কাউন্সিল করতে অন্যায়ভাবে অনুমতি দিয়েছিল তারা। হাস্যকর একটি মামলায় আমাকে রাজনীতি থেকে চার মাসের বেশি সময় দূরে রাখা হয়েছিল। আমরা নির্বাচন বর্জন করতে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম, সব কিছুই রেডি ছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা আমাদের অফিস কর্ডন করে রাখে। আমাদের নির্বাচন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে দেয়নি, এটা সবাই জানে। এখন কথা হচ্ছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আমাদের বাধ্য করে নির্বাচনে নেয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন না করলেও তো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তো বিএনপি অংশ নিয়েছিল। বিএনপির এমপিরা তো চার বছর সংসদে সক্রিয় অংশ নিয়েছিল। জিএম কাদের বলেন, বাধ্য হয়ে জাতীয় পার্টির ২০২৪ সালের নির্বাচনে যাওয়া যদি আওয়ামী লীগের নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হয় তাহলে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ও ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি কি আওয়ামী লীগের নির্বাচনকে বৈধতা দেয়নি? এ সময় তিনি বলেন, চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে পরিবহন সেক্টর বাঁচাতে হবে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাঁচাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপা মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ প্রমুখ।