আড়াই বছরে ৪৫ লাখ ইয়াবা, ৩৬ কেজি আইস জব্দ
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
র্যাব-১৫ এর টেকনাফের হোয়াইক্যং ক্যাম্প গত আড়াই বছরের প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা মূল্যের ৪৫ লাখ ৯২ হাজার ৩৭৮ পিস ইয়াবা, প্রায় ১৮০ কোটি টাকা মূল্যের ৩৬ কেজি ২৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, বিয়ার ৬৩৭ ক্যান, দেশি-বিদেশি ৭৬টি অস্ত্র, ১২৮ পিস বুলেট, ৩৬ পিস ফেনসিডিল, মদ ৩৯৩.৭ লিটার, বিয়ার ১৯২.৪৯ লিটারসহ এ ঘটনায় জড়িত ৫৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিপিসি-২ র্যাব টেকনাফের হোয়াইক্যং ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান।
সীমান্ত জেলা কক্সবাজার। তার দুই উপজেলা উখিয়া-টেকনাফের সীমান্তবর্তী ১৯টি পয়েন্টে সক্রিয় মাদক ও অস্ত্র চোরাকারবারিরা। বিভিন্ন সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক ও অস্ত্রের চালান দেশে প্রবেশ করলেও বেশিরভাগ আটকা সময় পড়ে র্যার এর হাতে। ফলে মাদক, অস্ত্রসহ নানা চোরাকারবারিদের আতঙ্কের নাম এখন র্যাব-১৫।
এলিট ফোর্স র্যাব ১৫-এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে র্যাব সদস্যরা মানব পাচার, স্বর্ণ চোরাচালান, অপহরণ, অস্ত্রের চালান, মাদক পাচারের ঢল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও মাদককারবারি, শীর্ষ সন্ত্রাসী, মানবপাচারকারী, অপহরণকারী চক্র এবং স্বর্ণ চোরাচালানকারিরা থেমে নেই। র্যাব-১৫ এর চোখকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে তারা মরিয়া।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তখনই পূর্বের মতো সিন্ডিকেট গড়ে তোলে উখিয়া-টেকনাফের শীর্ষ মাদক ও অস্ত্র চোরাকারবারিরা। বর্তমানে মাদককারবারি সিন্ডিকেট হঠাৎ করে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে উঠেছে। তাদের টার্গেট বর্তমানে বন্ধ থাকা উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত থেকে টেকনাফের লেদা পর্যন্ত মাদকের রুট পুনরায় সচল করা। কারণ র্যাব-১৫ এ সীমান্ত পয়েন্টের চোরাকারবারিদের কাছে বর্তমানে একটি আতঙ্ক। র্যাবকে ফাঁকি দেয়া বা কোণঠাসা করতে পারলেই যেন স্থানীয় মাদককারবারিদের মুক্তি মিলবে। সহজেই আনা-নেয়া যাবে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে উৎপাদিত মরণ নেশা ইয়াবার বড় বড় চালান।
র্যাব-১৫ এর টেকনাফ সিপিসি-২ হোয়াইক্যং ক্যাম্পের তথ্যমতে জানা গেছে, তারা অভিযান চালিয়ে ২০২২ সালে উদ্ধার করেছে ১০,২১,০৫০ ইয়াবা, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৩০,৬৩,১৫,০০০ টাকা। এছাড়া ওই বছর ৪৯৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, ৩৩৭.৯ লিটার বিদেশি মদ, ৬৩৭ ক্যান বিয়ার, ২টি একনলা বন্দুক, ১টি এসএমজি, ২টি এলজি, একটি পিস্তল, ১০ রাউন্ড গুলিসহ আসামি গ্রেপ্তার করেন ১৬৫ জন।
২০২৩ সালে ইয়াবা আটক করেছে ২৪,০০,৩৩৩ পিচ, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৭২,০০,৯৯,৯০০ টাকা। এছাড়াও ২৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইস যার বাজার মূল্য ১৩০ কোটি টাকা। ১৯২.৪৯ লিটার বিয়ার, ৩৯৩.৭ লিটার মদ, ১৬টি এলজি, ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি শর্টগান, ১০টি একনলা বন্ধুকসহ আসামি গ্রেফতার করেন ২৫৭ জন।
২০২৪ সালের চলতি মাস পর্যন্ত ইয়াবা উদ্ধার করেছে ১১, ৭০, ৯৯৫ পিস, যার মূল্য ৩৫,১২,৯৮,৫০০ টাকা। ৯. ৫৩০ গ্রাম আইস যার মূল্য ৪৭,৬৫, ০০,০০০ টাকা। এছাড়া ৪০টি অস্ত্র, ১১৮ রাউন্ড বুলেট, ৩৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ আসামি গ্রেফতার করেন ১৪৫ জন।
র্যার-১৫ এর অধিনায়ক এইচএম সাজ্জাদ হোসেনের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় এসব সফল অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-১৫ এর টেকনাফ সিপিসি-২ হোয়াইক্যং ক্যাম্পের চৌকস কোম্পানি কমান্ডার অ্যাডিশনাল এসপি মো. হাফিজুর রহমান।