ময়মনসিংহে অবরুদ্ধ সময়ের স্মৃতিতর্পণ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী কবিতা সংকলন ‘অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা’র পাঠ ও পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় দেশের শিল্প অঙ্গন থেকে ফ্যাসিবাদী দোসরদের অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় কবিতা পাঠ ও পর্যালোচনা সভায় এই দাবি জানান কবিরা। সভার শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কবি ও সম্পাদক এহসান হাবীব। এ সময় তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার লাগামহীন গুম, খুনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ওই সময়ে আমাদের জানমালের নিরাপত্তা ছিল না। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী কবিরা অবরুদ্ধ সময়ের কবিতায় কথা বলেছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। এ সময় দেশের অন্যতম কবি ও গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যত শিশু, নারী, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষ নিহত হয়েছে, পৃথিবীর কোনো বিপ্লবে এত মানুষ মরেনি। অথচ অনেক আওয়ামী লীগ এখনো গণহত্যা স্বীকার করে না। কিন্তু আমরা দেখেছি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গুলি করে হত্যা করে ক্ষমা তো দূরের কথা শোকও প্রকাশ করেনি। সভায় কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সায়ন্থ সাখাওয়াৎ বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে দেশে সাময়িক সময়ের জন্য যে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন ফ্যাসিস্টের কোনো স্থাপনের মাধ্যমে আবারও রোহিত না হয়। সে ব্যাপারে ছাত্র-জনতা রাজনীতিবিদসহ কবি লেখক সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যাকারী যারা পালিয়ে যায়, তাদের আর রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। দেশের মানুষ তাদের গ্রহণ করে না। এ সময় অবরুদ্ধ সময়ের কবিতার সম্পাদক এহসান হাবীবসহ অন্য বক্তারা অবিলম্বে শিল্প সাহিত্য অঙ্গনের ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে শিল্পকলা একাডেমির নবনিযুক্ত পরিচালক ও মহাপরিচালকের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রশাসনে আওয়ামী দোসরদের এখনো প্রাইজ পোস্টিংসহ বিভিন্ন জায়গায় পদায়ন করা হচ্ছে।
এখনো অনেকেই প্রশাসনে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। দিনভর এই কবি আড্ডায় আরও উপস্থিত ছিলেন সরকার আজিজ, কামরুজ্জামান কামু, মালেকুল হক, আবু বকর ?সিদ্দিক রোমেল, মোস্তফা তারেক, পলিয়ার ওয়াহিদ, রোমেনা আফরোজ, মুহিবুর রহিম, অনুপ সাদি, শাদমান শাহিদ, মুহাম্মদ মোস্তাকিম বিল্লাহ, সুফি সুফিয়ান, শামশাম তাজিল, সানোয়ার রাসেল, সাম্য শাহ, সাইয়েদ জামিল, জব্বার আল নাঈম, সানাউল্লাহ সাগর, বায়েজিদ বোস্তামী, শাহেরীন আরাফাত, রাশেদ শাহরিয়ার, শফিক সাঁই, আহমেদ ইসহাক, মিলু হাসান, ওয়াহিদ রোকন, নকিব মুকশি, সালেহীন শিপ্রা, রইস মুকুল, তাজ ইসলাম, রহমান মাজিদ, তারিক ফিজার, লাবীব ওয়াহিদ, রাসেল মিয়া, আকিব শিকদার, দিপু রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, তানজিদ আহমেদ, রুবেল মিয়া, সজিব আকন্দ, ফেরদৌসুল মনীরা লাবনী, আরাফাত রিকলে, এসএম রায়হান, তৌহিদুজ্জামানসহ অনেকে।