বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেছেন, বিএসসির পর পর দুইটি অয়েল ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলে ভাবা ঠিক হবে না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যেই এমন অপচেষ্টা করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে বিএসসির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১২টায় জাহাজে কোনো কাজ ছিল না। জাহাজে চারটা পয়েন্টে আগুন দেখা যায়। তাই আমাদের আশঙ্কা নাশকতা। এ সময় বিএসসির এমডি বলেন, কয়েকদিন আগে বাংলার জ্যোতিতে আগুন লেগেছিল। এরপর আগুন লাগল বাংলার সৌরভে। তাই আমরা ধারণা করছি, এ ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলার অপচেষ্টা। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা শনাক্ত করা উচিত। তিনি জানান, এটি লাস্ট সার্ভিস হওয়ার কথা ছিল বাংলার সৌরভের। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দরের ৭টি টাগ একযোগে কাজ করে। আগুন নেভানোর দেড় ঘণ্টা পর আবার আগুন ধরে যায়।
তিনি বলেন, বাংলার সৌরভে ১১ হাজার ৫৫ টন অপরিশোধিত তেল ছিল। ৪৮ জন ক্রু ও ওয়াচম্যান ছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। এর মধ্যে বিএসসির স্টুয়ার্ট সাদেক মিয়া হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩০ হাজার টনের একটি বিদেশি জাহাজ চাটারিং করা হয়েছে। এসপিএম চালু হলে লাইটারিং বন্ধ হবে। গত শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে একটার দিকে বাংলার সৌরভে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ সালে ডেনমার্কে তৈরি বিএসসির ‘বাংলার জ্যোতি’ জাহাজটির সামনের দিকে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নেভাতে কাজ করে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্ট গার্ড, কর্ণফুলী টানেল, বন্দর ও ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভানোর পর ৩ জনের লাশ পাওয়া যায়। তারা হলেন- বিএসসির নিজস্ব মেরিন ওয়ার্কশপের চার্জম্যান চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম, ২৫-৩০ বছর ধরে বিএসসিতে ডেইলিবেসিস কাজ করা কিশোরগঞ্জের মো. হারুণ, বরিশাল মেরিন একাডেমি থেকে পাস করে বের হওয়া ঝিনাইদহের ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা। আগুন নেভানোর সময় আহত হন বন্দরের কাণ্ডারি ১০ টাগ বোটের লস্কর মো. সোহেল রানা। তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিএসসির এমডি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নাশকতার বিষয় নিশ্চিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বছরে বিপিসির ১২-১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিবহন করে বিএসসি।