রেনুকে পিটিয়ে হত্যা
একজনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন চারজনের
রায়ে অসন্তুষ্ট রেনুর বোন
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আসামি রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ১ লাখ টাকা জরিমার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো এক বছরের কারাভোগ করতে হবে। গতকাল বুধবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুরশিদ আহম্মেদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। অন্য দিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ও মহিন উদ্দিনকে খালাস দেন আদালত। ২০১৯ সালের ২০ জুলাই উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে আহত করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিন বাড্ডা থানায় ৪০০-৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগনে নাসির উদ্দিন। ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক। ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতিমা ইমরোজ ক্ষনিকা ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ৩৬ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ও মহিন উদ্দিন। এ ছাড়া আসামি জাফর হোসেন পাটোয়ারী ও ওয়াসিম আহমেদ অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেয়া হয়েছে। তাদের বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে আলোচিত তাসলিমা বেগম রেনু হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট নয় নিহতের পরিবার। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন রেনুর বোন নাজমুন্নাহার নাজমা। গতকাল রায় ঘোষণার পর তিনি এ কথা বলেন। এ রায়ে সন্তুষ্ট না রেনুর দুই সন্তানও। তারা হলেন তাণ্ডসীন আল মাহির (১৬) ও মেয়ে তাসমিন মাহিরা তুবা (৯)। তারা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন। নাজমুন্নাহার নাজমা বলেন, ‘পাঁচ বছর দুই মাস আগে আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আজও আমরা তার শোক ভুলতে পারিনি। আমার বোনকে হত্যার সঙ্গে অনেকেই জড়িত ছিল। অথচ আদালত ছয় জনকে খালাস দিয়েছে। আমরা আসামিদের মৃত্যুদণ্ড চাই। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।’ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তাণ্ডসীন আল মাহির বলেন, ‘এ রায় নিয়ে আমরা প্রতীক্ষায় ছিলাম। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু রায়ে আমরা সন্তুষ্ট না।’