গৌরনদীতে শারদীয় দুর্গাপূজার চাল কালোবাজারে বিক্রি

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বরিশাল ব্যুরো

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৮৫টি পূজামণ্ডপে সরকারি বরাদ্দকৃত সাড়ে ৪২ মেট্রিকটন চাল সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কালোবাজারে কম দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে পূজা উদযাপন কমিটির বিরুদ্ধে। এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে প্রতি মেট্রিকটন চাল ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করায় প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ৮৫টি পূজামণ্ডপ।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট থেকে জানা গেছে প্রতি কেজি চালের পাইকারি বাজার মূল্য ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা এবং প্রতি কেজি আটার পাইকারি বাজার মূল্য ৩৬ টাকা। আটার দামে চাল বিক্রি করেছে পূজা উদযাপন কমিটি। এমনটাই দাবি সচেতন মহলের। এ বিষয় সরেজমিন গিয়ে জানা যায় গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের একাধিক সভাপতি/সম্পাদক অভিযোগ করে জানান, উপজেলার ৮৫টি পূজা মণ্ডপে সরকারিভাবে সাড়ে ৪২ মেট্রিক টন চাল বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ পায়। পূজা মণ্ডপের বরাদ্দকৃত চাল আনার চার-পাঁচ দিন পূর্বে স্বেচ্ছাসেবক কার্ড সরবরাহের নামে প্রথম দফায় মণ্ডপপ্রতি ৫০০ টাকা করে অগ্রিম মোট ৪১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলু রায়।

চাল উত্তোলনের জন্য গত ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে প্রকল্পের কাগজপত্রে প্রতিটি পূজা মণ্ডপের সভাপতি/সম্পাদকের কাছ থেকে ৪/৫টি স্বাক্ষর গ্রহণ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই দিন সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে পূজা মণ্ডপে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানের সময় পিআইও অফিস খরচ বাবদ দ্বিতীয় দফায় আরো ৫০০ টাকা করে কেটে রেখে প্রতিটি মণ্ডপে নগদ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হয়। এতে স্বেচ্ছাসেবক কার্ড ও পিআইও অফিস খরচ বাবদ মোট ১ হাজার টাকা নেয়া হলে মণ্ডপের তহবিলে ১৮ হাজার টাকা থাকে। পিআইও অফিস ও খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজশে পূজা উদযাপন কমিটি প্রতি কেজি চাল ৩৮ টাকা দরে চাল দিলেও কোনো কমিটিই এই অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে। গৌরনদী গয়নাঘাটা ব্রিজ সংলগ্ন মহাভারত সাহাবাড়ি পূজা মণ্ডপের সভাপতি সন্তোষ সাহা জানান, গত বছর চালের দাম কম থাকা সত্ত্বেও আমি সরকারি চাল বিক্রির টাকা ও এমপি তহবিল মিলিয়ে পূজা মণ্ডপের জন্য ৩১ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছি। তবে এবার পেয়েছি ১৮ টাকা ৫০০ টাকা। চাল যদি আমরা বিক্রি করতাম তাহলে হয়ত ৪-৫ হাজার টাকা বেশি পেতাম। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন অভিযোগ বলেন, আমার জানা মতে আমার অফিসের কেউ টাকা নিয়েছে তা আমার জানান নেই। তবে যদি কোনো অনিয়ম দুর্নিতির প্রমাণ মিলে তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।