মা-ছেলে এক সাথে এইচএসসি পাস
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহ ব্যুরো
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় একসঙ্গে মা ও ছেলে এইচএসসি পাস করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কৃতিত্ব অর্জনকারি এই মায়ের নাম শেফালী আক্তার। তিনি ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ গ্রামের বাসিন্দা। তার ছেলে মেহদী হাসান মিয়াদও পাস করেছে এইচএসসি।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলাফলে মা শেফালী আক্তার কারিগরি শাখা থেকে পেয়েছেন জিপিএ ৪.৩৩ এবং মানবিক শাখা থেকে ছেলে পেয়েছেন ৪.৮৩। এর মধ্যে শেফালী আক্তার ফুলবাড়িয়া কালাদহ জনতা মহাবিদ্যালয় কারিগরি শাখা থেকে ও ছেলে মেহদী হাসান মিয়াদ ঢাকার মিরপুরে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের মানবিক শাখা থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। মা-ছেলের এমন সাফল্যের খবরে ফুলবাড়িয়ার শিবরামপুর গ্রামজুড়ে চলছে আলোচনা। জানা যায়, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার শিবরামপুর গ্রামের দরিদ্র নুরুল ইসলামের স্ত্রী শেফালী আক্তার। তিনি স্থানীয় শুশুতি বাজারে সাফা মেডিকেল সেন্টারের রিসিপশনের কাজ করেন। স্বামী শুশুতি বাজারে ছোট্ট একটি লাইব্রেরির দোকন করেন। দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে অনেকটা অভাবের সংসার তাদের।
সূত্র জানায়, অষ্টম শ্রেণি পাস শেফালী আক্তার একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসারে সহযোগিতা করতেন। পরবর্তীতে এনজিওতে একই পদে এইচএসসি পাস সার্টিফিকেটধারীদের নিয়োগ দেয়া হলে তার চাকরি চলে যায়। এরপর তিনি প্রতিজ্ঞা করেন এইচএসসি পাস করবেন। চাকরি চলে যাবার পর, বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শুশুতি বাজারে সাফা মেডিকেল সেন্টারের রিসিপশনে বিকালের কাজ নেন তিনি। এর কিছুদিন পর আছিম বহুমূখি উচ্চ বিদ্যালয় কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন শেফালী আক্তার। তখন তার ছোট ছেলে মেহদী হাসান মিয়াদ শুশুতি উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র। বড় ছেলে শাকিল হাসান মৃদুড় তখন অনার্সের শিক্ষার্থী। সেই থেকে রিসিপশনে কাজ করার পাশাপশি ছেলেদের সাথে নিজেও লেখাপড়া চালিয়ে যান। মা শেফালী আক্তার বলেন, শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকায় চাকরি চলে যায়, স্বামী সন্তানের কাছে লজ্জায় পড়ে যাই। পরে সিদ্ধান্ত নেই লেখাপড়া করবো, এইচএসসি পাস করার খবরে গ্রামের মানুষও খুশি, আমাদের পরিবারে অনেক আনন্দ চলছে। গ্রামবাসীরা জানায়, শেফালীর মনোবল ও দৃঢ়তাই তাকে এই সফলতা এনে দিয়েছে। আগামীতেও তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যাক এমনটাই মনে করেন অনেকে।