দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদশূন্য আছে। সম্প্রতি সনয়ে আলোচনার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন। বর্তমানে তিনি বিভাগীয় প্রধান ও হল প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ব্যবসায় ও প্রশাসন অনুষদের শিক্ষকদের (বিবিএ) থেকেই এই পদে নিয়োগ হোক।
জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবীর চৌধুরী পদত্যাগ করলে এ পদের জন্য বিবিএ অনুষদের বা সংশ্লিষ্ট একজন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া দাবি জানিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে চেষ্টা করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইয়া, মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক ও গণিত বিভাগের জেষ্ঠ্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদ। তবে গত কয়েকদিন ধরে এই পদের জন্য শোনা যাচ্ছে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ড. সাবিনা শারমিনের নাম। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপকের নাম কোষাধ্যক্ষ হিসেবে সামনে আসায় দেখা দিয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। হল প্রভোস্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তাসহ তাদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের শিকার হন তিনি।
গত ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে লেখেন ‘তিন-চার দিন ধরে আমি এত অসুস্থ যে ওয়াশরুমে যেতে হলেও আমার সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছে। আমি হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু টেস্ট করানোর পর প্রভোস্ট ম্যামের সাথে আমার মাকে হলে রাখার অনুমতির বিষয়ে কথা বলতে যাই। কিন্তু নিয়মে না থাকায় সেটা না করে দেন। পরে ম্যাম বাজেভাবে আমার মাকে নিয়ে নানা উদাহরণ দিতে থাকেন। তিনি আমাকে বলেন, তুমি তোমার মায়ের কথা বলে অন্য কাউকে নিয়ে আসতে পার। তোমার আম্মু হলে এসে চুরি করতে পারে বা মেয়েদের গোপন ভিডিও করে ভাইরাল করতে পারে।’
এর আগে গত ২ অক্টোবর সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থীকে পোশাক নিয়ে সমালোচনা করেও তীব্র সমালোচনার শিকার হন ড. সাবিনা শারমিন। ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শিক্ষক গুরুজনরা সবাই ওয়ার্ল্ডওয়াইড নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তাদের কাছ থেকে পোশাক নিয়ে এই ধরনের কমেন্ট পেতে হবে আমরা কখনই আশা করিনি। ওনার কথা বলার ধরণ ছিল প্রচণ্ড এটাকিং। সেদিন ওখানে আরো কয়েকজন মেয়ে ছিল যারা ইনফরমাল পোশাকে ছিল। তাদের কিছুই বলা হয়নি। আমরা তার এই আচরণে এবং সকলের সামনে অপমানিত হওয়াতে অনেকটাই ট্রমাটাইজড হয়ে আছি। আমরা চেয়েছিলাম কাউকেই কথাটা জানাব না। কিন্তু আজ আমাদের সাথে হয়েছে, কাল অন্যদের সাথে হবে।