ঢাকায় পরিবহন করা কৃষিপণ্য বাজারজাতে সময়ক্ষেপণের আশঙ্কায় বিশেষ ট্রেনে অনাগ্রহ দেখা দিয়েছে কৃষকের। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য চালু হওয়া ট্রেনটিতে প্রথম দিনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কোনো বুকিং হয়নি। কৃষিপণ্য ছাড়ায় গতকাল শনিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজার দর নিয়ন্ত্রণে কৃষিপণ্য পরিবহনে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। সপ্তাহে একদিন করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে যাবে ট্রেনটি। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে কৃষিপণ্যের এই ট্রেনটি ছেড়ে যাবে সকাল সোয়া ৯টায়। যাত্রাপথে এই ট্রেনে শাক-সবজি, ডিম ও মাছ পরিবহন করা যাবে। রহনপুর থেকে ছাড়ার পর ট্রেনটি ১৩টি স্টেশনে বিরতি দিয়ে ঢাকার তেজগাঁও পৌঁছাবে। সবগুলো স্টেশন থেকেই পণ্য উঠানো ও নামানো যাবে। স্টেশন ভেদে পণ্যের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে প্রতি কেজি সবজি ও কৃষিপণ্য বহনে ১ টাকা ০৮ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৪৭ পয়সা খরচ হবে। তবে ডিমণ্ডমাছ পরিবহনের ক্ষেত্রে কেউ চাইলে পুরো ওয়াগন ভাড়া নিতে পারবেন। বিশেষ ট্রেনে প্রতিদিন ১২০ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। ট্রেনে কৃষিপণ্য পরিবহনে অনাগ্রহের বিষয়ে রহনপুরের কৃষিপণ্য ব্যবসায়ী আরাফাত রহমান বলেন, ট্রেনের থেকে পিকআপে কৃষিপণ্য পরিবহনে খরচ কম হওয়ার পাশাপশি অনেক সুবিধা আছে। ট্রেনে পণ্য পরিবহন করতে কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকামের আলাদা খরচ লাগবে। কিন্তু পিকআপে সরাসরি জমি থেকে মোকাম পর্যন্ত পণ্য পৌঁছানো যায়। হিসেব করে দেখেছি পিকআপের থেকে ট্রেনে পণ্য পরিবহন করলে কেজি প্রতি ৩ টাকার বেশি গুণতে হবে। শফিকুর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, সাধারণত সন্ধ্যার দিকে পিকআপে সবজি লোড করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভোর হতে হতে মোকামে পৌঁছে যায়। কিন্তু ট্রেনে সবজি পরিবহন করে বাজার ধরাতে অনেক বেগ পেতে হবে। কারণ ট্রেনটি রহনপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে সকাল সোয়া ৯টায়। রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামুন আলী বলেন, কৃষিপণ্য বুকিং না হওয়ায় এখান থেকে ওয়াগন ফাঁকা রেখেই ট্রেনটি ছেড়ে গেছে। ট্রেনটি জেলার নাচোল ও আমনুরা স্টেশনে থামলেও, কোনো কৃষিপণ্য বুকিং হয়নি। ফলে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়েছে কৃষিপণ্য ছাড়াই। বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে সম্প্রতি চীন থেকে আনা আধুনিক কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ট্রেনে থাকছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগিও। তিনি বলেন, সড়কপথে বিভিন্ন কারণে পণ্য পরিবহনের ভোগান্তি ও প্রতিবন্ধকতা দূর করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেচাকেনার সময় বিবেচনা করে রাতে পৌঁছাবে ট্রেন।