ফরিদপুরে পেঁয়াজ রোপণ শুরু

বীজের দামে রেকর্ড

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মেহেদী সোহেল, ফরিদপুর

ফরিদপুরে শুরু হয়েছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মশলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ এর চাষাবাদ। জেলার সর্বত্র হলেও মুড়িকাটা বা মূল কাটা পেঁয়াজের চাষ সাধারণত সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া, নর্থ চ্যানেল, ঈশান গোপালপুর ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নে এ বেশি দেখা যায়। তবে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারে পেঁয়াজ চাষে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর ব্লকের জুমাদ্দার ডাঙ্গীর পেঁয়াজ চাষি মাঈন উদ্দীন ফকির বলেন, আমরা প্রতি বছরই মুড়ি কাটা পেঁয়াজ চাষ করি। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে চাষ করছি, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের খরচ অনকে বেশি। অন্য বছরগুলোতে যেখানে রোপণ শুরু থেকে পেঁয়াজ তোলা পর্যন্ত ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হতো সেখানে এবার খরচ হচ্ছে দের থেকে দুই লাখ টাকা। যা পেঁয়াজ উৎপাদন খরচে অতিতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে। তবে এবার যদি নতুন পেঁয়াজের বাজার মূল্য ৫ হাজার টাকার নিচে হয়, তাহলে চাষিরা অর্থনীতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের হাজী ইসমাইল মুন্সীর ডাঙ্গীর চাষি নাজমুল হক মিয়া বলেন, এ বছর পেঁয়াজ চাষে বড় সমস্যা হচ্ছে পেঁয়াজ বীজ বা গুটি পেঁয়াজের মাত্রা অতিরিক্ত দাম। অন্য বছরে যেখানে আকার অনুযায়ী ২ থেকে ৫ হাজার টাকায় গুটি পেঁয়াজ পাওয়া গেছে এবার সেখানে এক মণ গুটি কিনতে ৮ থেকে ২৩ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। এত বেশি দামে গুটি পেঁয়াজ আগে কখনো বিক্রি হতে দেখা যায়নি। নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চর টেপুরাকান্দি ব্লকের উপসহকারী কর্মকতা ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার পেঁয়াজ রোপণের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে, তবে চাষিরা আগের চেয়ে এবার বেশ পেঁয়াজ আবাদ করছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ফরিদপুর জেলার মধ্যে আমাদের সদর উপজেলাতেই মুড়ি কাটা পেঁয়াজ এর আবাদ বেশি হয়। গত বছর ২৩০০ হেক্টর জমিতে এ পেঁয়াজ আবাদ হয়েছিলো তবে এবার দাম বেশি হওয়ায় আবাদ কিছুটা বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজ আবাদে সাধারণত চাষিরা লাভবান হয়ে থাকেন, এবারও তারা লাভবান হবেন। এ বছর উৎপাদন ব্যায় দ্বিগুন হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা, এতে তারা ক্ষতির মুখে পরবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর মো. আলাউদ্দিন খান বলেন, দেশে খাবার পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে বীজ পেঁয়াজ বা গুটির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ কারণেই উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তবে এতে চাষদের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। এই পেঁয়াজ যখন তুলবে তখন বাজারে খুব ভালো মূল্যে বিক্রি করতে পারবে এবং চাষিরা লাভবান হবেন।