ষষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ এর বিভিন্ন ধাপে স্বতন্ত্রভাবে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানদের স্বপদে বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ক্র্যাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইজাদুর রহমান চৌধুরী মিলন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমরা বিজয় অর্জন করে শপথগ্রহণ করে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম শুরু করি। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভাসহ রাষ্ট্র ও সরকার কর্তৃক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। বিগত ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখার স্মারক নম্বর- ৪৬.০০.০০০০.০০০.০৮৬.৯৯.০০১.২৪-৪৮৯ পত্রের আদেশ অনুযায়ী সারা বাংলাদেশের ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে সাময়িকভাবে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। যা খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আমরা গত ৪ নভেম্বর উপদেষ্টা ও সচিব স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবরে আমাদের পুনর্বহালের জন্য আবেদন করি। আজও প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে সবিনয়ে অনুরোধ করবো, একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে উপজেলা পরিষদ। এখান থেকে উপজেলার সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, উপজেলার আইনশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস, নাশকতাসহ সব নাগরিকের সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ আপৎকালীন সময়ে উপজেলা পরিষদ জনগণের সাথে কাজ করে। দীর্ঘদিন প্রশাসক দিয়ে উপজেলা পরিষদে জনগণের সেবা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জনগণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ আইন ব্যতিরেকে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা)কে অব্যাহতি প্রদান স্থানীয় সরকারের মূল আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। যা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদশের সংবিধানের পরিপন্থি। একসাথে সারা বাংলাদেশের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণকে অব্যাহতি দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যেখানে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন করে) কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে স্থানীয় সরকারের শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
লিখিত বক্তব্যে মিলন আরো বলেন, বিগত সরকারের আমলে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ও পরিষদ বহাল তবিয়তে আছে। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও মহানগর বিএনপি নেতা শপথগ্রহণ করে মেয়র হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা হতবাক হয়েছি। এই বিষয়গুলো বৈষম্যবিরোধী নয় কী? আমরা আজকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে শ্রদ্ধার সাথে আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে জানাতে চাই বিগত ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়। জনগণের স্বতঃস্বফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো। যা তৎকালীন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। কোথাও যদি কেউ কোনো অনিয়ম বা পেশি শক্তির ব্যবহার, ভোট ডাকাতি করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে থাকে তাহলে সেইগুলো চিহ্নিত করে ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগভাবে সেইসব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অপসারণ করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এএসএম জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আশরাফ হোসেন আলীম, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।