মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও সেখ বশির উদ্দিনকে উপদেষ্টা বানিয়ে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’ নামের একটি সংগঠন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে অন্তর্বর্তী সরকারে আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে এ কথা বলেন বক্তারা। সভায় বক্তারা বলেন, শহীদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি অথচ রক্তের সঙ্গে বেঈমানি শুরু হয়ে গেছে। আমরা বলছি, ২৪ এর হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না করে যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, যারা ফ্যাসিবাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে, আগামীর যুদ্ধ তাদের বিরুদ্ধে। আমরা বলতে চাই, আপনারা দয়া করে আওয়ামী লীগের সৈনিকদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবেন না। যদি চেষ্টা করেন, তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করব। তারা বলেন, সেখ বশির উদ্দিন আর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফ্যাসিবাদের উত্তরসূরি। আমরা সেখ বশিরের নাম দেখেছি ২৪-এর বিপ্লবে শহীদ হওয়া খুনিদের তালিকায়। সেই সেখ বশিরের নাম উপদেষ্টার তালিকায় দেখে আমরা লজ্জিত হয়েছি। আর আজ যে ফারুকীকে উপদেষ্টা করা হয়েছে সেই ফারুকী ২০১৩ সালে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম মূলহোতা ছিলেন। তিনি ২৪ এর আন্দোলনের আগে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীর পাশে ছিলেন। তার স্ত্রীও (তিশা) আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীদের পাশে ছিলেন। এই ফারুকী ও বশিরকে উপদেষ্টা করায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে ফারুকীর অসংখ্য ফেসবুক স্ট্যাটাস রয়েছে। কিন্তু যখন তার সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’ আওয়ামী সরকার আটকে দিল, তখন তিনি আওয়ামী লীগের বিপক্ষে গেলেন। আর বশির হত্যা মামলার আসামি। আমরা বারবার বলছি এই সরকার জনগণের সরকার। এই সরকারকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাই উপদেষ্টা প্যানেলকে বলব, আপনারা সিদ্ধান্ত নিতে হলে দেশের যে বিভিন্ন অংশীজন রয়েছে, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনারা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না, যার কারণে জনগণ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। এ সময় বিক্ষোভে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, আপনারা যত্রতত্রভাবে উপদেষ্টা বানাচ্ছেন। অথচ আমাদের দেড় কোটি প্রবাসীর মধ্যে থেকে একটা ব্যক্তিকেও উপদেষ্টা বানাননি। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, ওই দেড় কোটি প্রবাসীর মধ্যে থেকে একজন উপদেষ্টা বানাতে হবে। অন্যথায় তারা কিন্তু এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নামানোর জন্য রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দেবে। অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্রনেতা আব্দুর জাহের, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব আবু হানিফ প্রমুখ।