ঢাকা ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্তর্বর্তী সরকার কি শিক্ষার্থীদের কোনো বার্তা দিচ্ছে?

অন্তর্বর্তী সরকার কি শিক্ষার্থীদের কোনো বার্তা দিচ্ছে?

অন্তর্বর্তী সরকার শুরুর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিভিন্ন দাবি মেনে নিলেও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু দাবি মানেনি। এই অবস্থায় সবশেষ নিয়োগ পাওয়া তিন উপদেষ্টার মধ্যে দুইজনের পদত্যাগ দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এই দুইজন উপদেষ্টা হলেন, শিল্পগোষ্ঠী আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন এবং চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে দেশের বাইরে থাকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশে ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘৮ আগস্ট যখন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয় তখন প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ার শর্ত হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি শর্ত দিয়েছিলেন যে, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের তিনি তার পছন্দ অনুযায়ী নেবেন। কিন্তু তাদের নিয়ে কোনো সমস্যা হলে তখন সেটা দেখা হবে। ফলে উপদেষ্টাদের তার পছন্দেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিলো। আমাদের পক্ষ থেকে ছিলো। সেখান থেকেও তিনি নিয়েছেন। কিন্তু পরে যে দুই দফা উপদেষ্টা নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শই করেননি।’ আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ছাত্ররাই তাকে নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই তিনি সর্বশেষ উপদেষ্টাদের নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি সরকারে থাকা আমাদের তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি, তারাও আমাদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি।’ তিনি বলেন, ‘সেখ বশির উদ্দিন এবং মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তারা দুইজনই ফ্যাসিবাদের সহযোগী। আর একজনের বিরুদ্ধে তো মামলাই আছে। আমরা দুইজনেরই অপসারণ চাই। অপসারণ করা না হলে আমরা চূড়ান্ত অ্যাকশনে যাবো।’ আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘সেখ বশির উদ্দিন নিয়ে আমাদের তেমন কোনো আপত্তি না থাকলেও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে তো আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। কারণ, তিনি মুজিববাদের সমর্থক। তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তাদের নিয়োগ দেয়া নিয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’ তার কথা, ‘সরকারের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়ছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যোগাযোগ কমছে, যোগাযোগ কম হচ্ছে। এটা দিয়ে সরকার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না তা আমরা বোঝার চেষ্টা করছি। সেরকম কিছু হলে আমরা চূড়ান্ত অ্যাকশনে যাবো।’ আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ব্যাপারে ড. ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদ একমত ছিলো। রাজনৈতিক ঐক্যমতের দরকার ছিলো। সেটা না হওয়ায় রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করেননি। কিন্তু এই নতুন দুই উপদেষ্টার ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য আছে। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আসলে সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন। তারা প্রতি সপ্তাহে কী করছেন তা জাতিকে জানাতে হবে। আমাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে কি না সেটা বিষয় নয়। তারা জাতির কাছে জবাবদিহিতা করলেই হবে।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর কথায় উপদেষ্টা নিয়োগ বা সরকার পরিচালনা অনাকাঙ্ক্ষিত। রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে সরকার গঠন করা দরকার ছিলো। তাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘এখন সরকার কে চালায়, কারা উপদেষ্টা নিয়োগ করছেন, কীভাবে চলছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। পুরো তালগোল পাকিয়ে ফেলা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।’ ‘ইউনূস সাহেব শুরুতে ছাত্ররা তাকে নিয়োগ দিয়েছে বলে ভুল করেছেন। ফলে ছাত্রদের একটা বাড়তি চাপ দেয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত