অন্তর্বর্তী সরকারকে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে সংস্কার করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, বড় সমস্যা সমাধান করা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
গতকাল শনিবার সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ডুমুরিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাবাহারা সন্তানরা কবরখানায় বাবার খোঁজ নিচ্ছে। জালিমরা শুধু বুলেট দিয়ে মানুষ খুন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, আগুন দিয়ে লাশ পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছে। তাদের দেশের মানুষ কখনো ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও তার ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। তিনি প্রতিটি সেক্টরে বসিয়ে রাখা দোসরদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছেন। তাদের এসব ষড়যন্ত্র রুখতে সব কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, ডুমুরিয়া ও ফুলতলা একসময় সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। তখন আমি জনগণকে সাথে নিয়ে জীবন বাজি রেখে সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের নির্মূল করার চেষ্টা করেছি। আজ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতা নিরসনে এরইমধ্যে মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত করছে হাসিনা। ফ্যাসিস্ট সরকারের দলবাজ প্রধান বিচারপতি নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ সরকার বলার চক্রান্ত করেছিল। তবে ছাত্র-জনতা তাদের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, দেশ সংস্কারে যতটুকু সময় দরকার ততটুকু সময় অবশ্যই দেয়া হবে। কিন্তু অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এটা চলতে পারে না। যৌক্তিক সময় এর ব্যাখ্যা হচ্ছে জনগণ যে পরিবেশে অবাধ ও নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে, ভোট দিতে গেলে কেউ বলবে না, ভোট দেয়া হয়ে গেছে এবং দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে। এমন পরিবেশ তৈরিতে যতটুকু সময় লাগে, সে সময়টিকে আমরা যৌক্তিক সময় বলছি।
তিনি বলেন, কেবল তিন মাস হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। কিন্তু সেই অপরাধপ্রবণতা ১০০ ভাগ বিদায় হয়নি। এখনো কিছু অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তবে মাত্রা কম। এ বিষয়গুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি। জামায়াতে ইসলামী অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সব সময় দৃঢ় থাকবে। খুলনা জেলা মজলিসে শূরার সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা দক্ষিণের আমির মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, খুলনা জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্যা, খুলনা জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি বেলাল হোসাইন রিয়াদ।