এক কাঠগড়ায় ৪৫ মিনিট
সালমান, আনিসুল, মেনন, শাজাহান, কামাল ও দীপু মনি
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৯টা। খাসকামরা থেকে বেরিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের এজলাসে আসেন বিচারক। বিচারকের ঠিক সামনেই আসামির কাঠগড়া। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। তাদের সবার বাঁ হাতে হাতকড়া। গতকাল বুধবার সকালে আদালতকক্ষে বিচারের কার্যক্রম শুরু হলে উপস্থিত একজন পুলিশ কর্মকর্তা উঁচুস্বরে ডাকেন, ‘জনাব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।’ তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা জ্যাকব ডান হাত উঁচু করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকে বলেন, রাজধানীর রূপনগরে গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শামীম হাওলাদার নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার একজন আসামি জ্যাকব। এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নেওয়া জরুরি। রিমান্ডের বিরোধিতা করেন জ্যাকবের আইনজীবী। এরপর জ্যাকব নিজেই আদালতে কথা বলেন। জ্যাকব বলেন, মাননীয় আদালত, আমি ভোলার চরফ্যাশনের এমপি (সংসদ সদস্য) ছিলাম। আমি কোনো দিন ঢাকায় রাজনীতি করিনি। জন্মের পর কোনো দিন ঢাকার রূপনগরে যাইনি। অথচ আমার বিরুদ্ধে রূপনগর থানায় হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এটি হয়রানিমূলক মামলা। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত এই হত্যা মামলায় জ্যাকবকে তিন দিন রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেন। এরপর আনিসুলের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন ফজলুল করিম নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আনিসুল। এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। এ সময় রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখেন আনিসুলের আইনজীবী। আদালতকে তিনি বলেন, আনিসুল এ হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আনিসুলকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। তখন আনিসুল বিমর্ষ অবস্থায় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।