ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচার কাজের অডিও ভিজ্যুয়াল প্রচার করতে পারবে

আসিফ নজরুল

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচার কাজের অডিও ভিজ্যুয়াল রেকর্ড করে প্রচার করতে পারবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তবে বিচারের পক্ষগুলো যারা আছে তাদের ডিগনিটি, প্রাইভেসি ও অধিকার রয়েছে, সেগুলোতে নজর রেখে সেটা করা হবে। গতকাল সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান তিনি। এর আগে সকালে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ত্রয়োদশ বৈঠকে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

আইন নজরুল বলেন, আজ ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নতুন আইনে ট্রাইব্যুনাল ইচ্ছে করলে (বাধ্যতামূলক না) বিচার কাজের অডিও ভিজ্যুয়াল রেকর্ড করে প্রচার করতে পারবেন। ওনারা যদি মনে করে এটা প্রচার করা দরকার তাহলে কোনো অংশ প্রচার করতে পারবেন। তবে যে পক্ষগুলো আছে তাদের ডিগনিটি, প্রাইভেসি ও অধিকার রয়েছে সেগুলোতে নজর রেখে সেটা করা হবে।

তিনি বলেন, এ বিচারটি যেন আন্তর্জাতিক মানের হয়, সেজন্য দেশি-বিদেশি আইনজ্ঞ ও সাধারণ মানুষের মতামত নিয়েই সংশোধন করা হয়েছে। এ আইনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সবার সমান সুযোগ দেয়া হয়েছে। ১৯৭৩ সালের আইনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবেন, নতুন আইনের অভিযুক্তদের বেশি সুযোগ দেয়া হয়েছে। যেকোনো পক্ষ চাইলে তারা সাক্ষ্য আনতে পারবেন। সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন।

উপদেষ্টা বলেন, আইনে ভিকটিমের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যারা সাক্ষী দিতে বা ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দেবেন বা যেকোনো উপায়ে সাক্ষী দিতে আসবেন, সবার নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ আইনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কম্পেনসেশন বিধান করা হয়েছে। এ আইনের তিন বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, আসামি পক্ষ বা ডিফেন্স ফোর্স যে কেউ চাইলে আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন। এ আইনের নতুন একটি চমৎকার বিধান হয়েছে, পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিধানের স্পষ্ট করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বা দেশি যেকোনো মানবাধিকার সংগঠন যে কেউ চাইলে এই বিচার কাজ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। বিচার কাজ শুদ্ধ হচ্ছে কি না, সঠিকভাবে হচ্ছে না কি উপস্থিত থেকে মনিটরিং করতে পারবে। তিনি জানান, খসড়াটি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয়, মানবাধিকার কর্মী, মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক আইনে বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনের সঙ্গে বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের মতামত ও পরামর্শ পর্যালোচনা করে আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক প্রণীত খসড়ায় সংযোজন ও পরিমার্জন করা হয়েছে।

উপদেষ্টা আরো জানান, যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতাধীন অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন যুগোপযোগীকরণের বিষয়ে আশু ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শীর্ষক অধ্যাদেশের খসড়া উপদেষ্টা পরিষদের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। পরে বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।