শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন আনিসুল হক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর কেবল ঢাকায় আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ৫৫টি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। আজ তিনি কাঠগড়ায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট ইউসুফ সরদার নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার এজাহারে আনিসুল হকের নাম রয়েছে। এ মামলায় তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। তখন আনিসুল হকের আইনজীবী এই রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন। আনিসুল হক তখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আনিসুল হকের রিমান্ড শুনানির সময় ঠিক তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কামরুল ইসলাম। তাকে লালবাগ থানায় দায়ের করা খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে পুলিশ। কামরুলের আইনজীবী আদালতকে বলেন, তার মক্কেল নানা রোগে আক্রান্ত। তিনি ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার বয়স ৭৩ বছর।
এ সময় কামরুল নিজেই আদালতকে বলেন, তিনি খুবই অসুস্থ। যে এলাকায় এ খুনের ঘটনা ঘটেছে, তিনি সেই এলাকার সংসদ সদস্যও নন। এই খুনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
এ সময় কামরুল ইসলামের বক্তব্যের বিরোধিতা করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, আদালতে কেবলই শুনি, তারা নানা রোগে আক্রান্ত। কিডনি নেই, লিভার নেই, আরো অনেক কিছুই নেই। কিন্তু আন্দোলনের সময় তারা সবাই সুস্থ। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে কামরুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কামরুলের ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজী সেলিম। তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছেলে সোলাইমান সেলিম। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, চকবাজারে রাকিব হাওলাদার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন সোলাইমান সেলিম। তখন তার আইনজীবী প্রাণনাথ রায় আদালতে বলেন, তার মক্কেল বিদেশে লেখাপড়া করেছেন। তার বাবা হাজী সেলিম কথা বলতে পারেন না। এরপর বিদেশ থেকে এসে বাবার আসনে তিনি নির্বাচন করেন। এই হত্যা মামলা হওয়ার আগে তার নামে কোনো থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও নেই। আইনজীবী প্রাণনাথ রায় আদালতে আরো বলেন, বাবার আসনে নির্বাচন করাটাই সোলাইমানের জন্য কাল হয়েছে। তিনি কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। শুনানি শেষে আদালত এ মামলায় সোলাইমানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া লালবাগ থানায় দায়ের করা খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় সোলাইমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।