বাংলাদেশের পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে, সেখানে নাম আসায় যুক্তরাজ্যের লেবার সরকারের প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে দুর্নীতিবিরোধী কাজের দায়িত্ব থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন কনজারভেটিভরা। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছিলেন। বাজারদরের চেয়ে বেশি খরচের ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার পরিবারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি রোসাটম। ডেইলি মেইল লিখেছে, ইউক্রেইন যুদ্ধের পর ওই কোম্পানি এবং রোসাটম সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪৫টি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল স্যাংশন ইমপ্লিমেন্টেশন অফিস। আর ওই অফিস দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন স্বয়ং টিউলিপ। রোসাটমের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি নিয়মিত পর্যালোচনা দায়িত্ব সিটি মিনিস্টার হিসেবে টিউলিপের হাতেই রয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স বলেছেন, ‘টিউলিপের ব্যক্তিগত লেনদেন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর না মেলা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতিগত সিদ্ধান্তের দায়িত্ব থেকে অবশ্যই তাকে সরিয়ে রাখতে হবে কিয়ার স্টারমারকে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের বরাতে ডেইলি মেইল লিখেছে, অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে তা ঘটেছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, যখন টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা দোর্দণ্ড প্রতাপে প্রধানমন্ত্রিত্ব চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশ্য কথিত দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনকে ‘উসকানিমূলক’ দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। এ ধরনের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকিও দিয়েছে তারা। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শত শত প্রাণহানির পর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও টিউলিপের মা শেখ রেহানা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর দুদক তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিলে সেখানে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপের নাম আসে। তারপর থেকে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তাকে নিয়ে শোরগোল চলছে।