বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ ফর ইউনিটির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মহানগর থেকে শিক্ষার্থীদের বহনকারী ২৫টি বাস ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। পথিমধ্যে বাগেরহাটের মোল্লাহাট মাদ্রাসাঘাট এলাকায় পৌঁছালে গাড়িবহরের সাইড দেয়াকে কেন্দ্র করে ইমাদ পরিবহনের সাথে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকরা ছাত্রদের বহরে হামলা করে। পরে ছাত্ররা একত্রিত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে ইমাদ পরিবহনের কাউন্টারের লোকজন তাৎক্ষণিক স্থানীয় মসজিদের মাইকে এলাকাবাসীকে ডেকে জড়ো করে আবারো ছাত্রদের উপরে হামলা করে। এসময় ছাত্ররা পতিরোধ করলে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় সন্ত্রাসী হামলায় ছাত্রদের বহনকারি বেশ কয়েকটি গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ২০ জন ছাত্র আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে সন্ত্রাসীরা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা জানান, বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মোল্লাহাট অতিক্রম করার সময় আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন ইমাদ পরিবহনের শ্রমিক কর্মচারীরা পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে গাড়িবহরে। এসময় স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতা করে। থানার সামনে ঘটনা হওয়া স্বত্তেও বেশ কিছু সময় নিরব ভূমিকায় ছিলো পুলিশ এমন অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তবে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা সাধারণ মানুষের সাথে এই ধরনের আচারণ করে থাকে। তারা ছাত্রদের গাড়িবহর বুঝতে পারেনি। না বুঝেই ছাত্রদের উপর হামলা করে বিপদে পড়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সমন্বয়ক জহুরুল তানভীর জানান, ‘খুলনা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের বহর ঢাকায় যাচ্ছিলো। পথে আমাদের উপর হামলা করে। অনেকে আহত হয়েছে।’ ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা এই আক্রমণ করেছে বলে জানান তিনি। আরেক সমন্বয়ক মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ জানান, পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করা হয়েছে। তবে কোনো বাঁধা আমাদের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না। আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরেছে। এর বিচার অতিদ্রুত করতে হবে, জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে জড়িতদের খুঁজে বের করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, ইমাদ পরিবহন নামের একটি বাসের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাড়িবহরের সাইড দেয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হযেছে বলে তিনি জানান।
