বিদায়ী বছর ২০২৪ সালে ডেঙ্গু চোখ রাঙ্গালেও নতুন বছর ২০২৫ সালে এর প্রকোপ কমেছে অনেকটাই। গত তিনদিনে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনো ঘটনা ঘটেনি। কমেছে আক্রান্তের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৩ জন। ফলে নতুন বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৫ জন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরো ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে নতুন করে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার রয়েছেন ৭ জন। এছাড়াও ঢাকা বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম তিনদিনে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১৬৫ জন। যাদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ৮০ শতাংশ নারী। প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৪ সালে এক লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ সময় মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এর আগে, ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।