ক্যান্সারের চিকিৎসায় টিকা নিয়ে দীর্ঘদিনের গবেষণার পর অবশেষে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষায়িত এই টিকা মূলত ইমিউন সিস্টেম বা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে টিউমার চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার নানা ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ইতিবাচক ফলাফল দেখাচ্ছে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় করার ধারণাটি কিন্তু নতুন নয়। ১৯শ’ শতকের শেষভাগে নিউইয়র্কের সার্জন উইলিয়াম কোলি আবিষ্কার করেছিলেন, ব্যাকরেটিয়ার সংক্রমণ ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। কোলি তার গবেষণায় প্রায় এক হাজার রোগীর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করিয়ে চিকিৎসা করেছিলেন, যার অনেক ক্ষেত্রেই সফল ফলাফল পাওয়া যায়। বর্তমানে ক্যান্সার টিকার গবেষণা নতুন ধাপে পৌঁছেছে। আধুনিক বিজ্ঞানীরা টিউমারের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করছেন, কোন মিউটেশন বা নিওঅ্যান্টিজেন ইমিউন সিস্টেমকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় আরএনএ ব্যবহার করে শরীরের কোষকে ক্যান্সারের নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন তৈরি করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এর ফলে ইমিউন সিস্টেম ক্যান্সারের কোষগুলোকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। দুই মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মডার্না এবং মার্কের তৈরি একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক (প্রত্যেকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি) এমআরএনএ ক্যান্সার টিকা (এমআরএনএ-৪১৫৭ বা ভি৯৪০) সম্প্রতি মেলানোমা (একধরনের স্কিন ক্যান্সার) রোগীদের ওপর সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এই টিকা ক্যান্সার পুনরাবৃত্তি বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমিয়ে এনেছে।