ছাত্র-অছাত্রের মাঝে সমতার ভিত্তিতে জাবি ছাত্রদলের কমিটি!
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জাবি প্রতিনিধি
দীর্ঘ ৯ বছর পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ জনই মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী। সেই হিসেবে কমিটির প্রায় ৪৮ শতাংশ নেতাকর্মীই অছাত্র। এমনকি গঠিত এই কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯ ব্যাচ) শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন বাবর ও সদস্য সচিব ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের (৪০ ব্যাচ) দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আহমেদ অনীক উভয়েই অছাত্র।
গতকাল কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেজে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কমিটি প্রকাশিত হয়। এতে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ঘোষিত এই কমিটিতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বাইরে ৫৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক পদের রাখা হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সর্বশেষ ৪৫ ব্যাচ (২০১৫-১৬ সেশন) পর্যন্ত রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে পাওয়া তথ্য মতে বেশিরভাগ বিভাগগুলোতেই ৪৭ তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) অনার্স-মাস্টার্স শেষ হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে ২৮ জনই ৪৬ ম্যাচের শিক্ষার্থী। এরা সবাই অছাত্র। ফলে নেতৃত্ব স্থানীয় পর্যায়ের সবাই প্রায় অছাত্র। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটগুলোর মতো তোপের মুখে পড়ার শঙ্কা থেকেই নামে মাত্র ছাত্রত্ব থাকা শিক্ষার্থীদের পদ দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এছাড়া এ কমিটিতে ১০৭৭ জনের মধ্যে মাত্র তিনজন নারী শিক্ষার্থীকে রাখা হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী শিক্ষার্থী। এছাড়া কমিটিতে ১৭৭ জনের নাম থাকলেও গত ০৫ আগস্টের আগে দলীয় কর্মসূচিতে ৫ থেকে ৭ জনের বেশি কর্মীকে দেখা যায়নি। হাসিনা সরকার উৎখাতের পর মাত্র চার মাস সময় রাতারাতি এই সংখ্যা কিভাবে বাড়লো ও কর্মীদের কিসের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এতে ত্যাগীও সাম্প্রতিক যোগদান করার নেতাকর্মীদের একইভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে মনে করছেন ছাত্রদলের অনেক নেতা কর্মী। এতে কেউ কেউ বিষয়টিকে পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন হিসেবেও দেখছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।