তিনি পরিমল কান্তি দে নন। তার পিতা-মাতার নামও অশ্বিনী কুমার দে ও তরু বালা দে নয়। তার নাম পরিমল কান্তি শীল। বাবা ও মায়ের নাম বিনোদ বিহারী শীল ও মনি বালা শীল। দুইজনের নামের কিছুটা মিল থাকলেও বাবা-মা ও ঠিকানার কোনো মিল নেই। তারপরও কিছু মিডিয়া এক পরিমলের সঙ্গে আরেক পরিমলকে গুলিয়ে ফেলেছে। পরিমল কান্তি দে ছিলেন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর পরিমল কান্তি শীল একজন গ্রাম্য ডাক্তার। রাজনীতির সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। চব্বিশের ৫ আগস্টের পর কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর এই বাসিন্দা হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলের ট্রাস্টি মনোনীত হয়েছেন। তিনি যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির রাজনীতির সঙ্গে। ইতোপূর্বে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
পরিমল কান্তি শীল নিজেই এমন তথ্য সাংবাদিকদের সঙ্গে তুলে ধরেছেন। গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজার শহরের এক অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন। এই সংবাদ সম্মেলনে একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসহ কয়েকটি মিডিয়ায় পরিমল কান্তি শীল ও জামায়াতে ইসলামির কক্সবাজারের কর্মী সমাবেশকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ।
বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি হিসেবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামির কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রেখেছিলেন পরিমল কান্তি শীল। সেই বক্তব্য ঘিরে বেশ কয়েকটি মিডিয়া ‘জামায়াতের সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যসহ নানা শিরোনামে সংবাদ প্রচার করে। এই বিভ্রান্তি দূর করতেই জামায়াতে ইসলামির পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে পরিমল কান্তি শীল বলেন, আমি কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, কোন রাজনীতির সঙ্গেই ছিলাম না। আমি একজন সাধারণ মানুষ, গ্রামে গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতাম। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাকে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি করা হয়, যার জন্য আমাকে একটি টাকাও কাউকে দিতে হয়নি। কাউকে এক কাপ চা-ও খাওয়াতে হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত প্রতিপক্ষরা চক্রান্ত শুরু করেছেন। পরিমল কান্তি শীল বলেন, আমি মনে মনে চিন্তা করলাম আমারও কোন রাজনৈতিক দলের সাথে থাকা দরকার। আমি জামায়াতে ইসলামির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হলাম। কেননা, তারা মদ গাঁজা খায় না। তারা নিয়মিত নামাজ পড়েন। তারা ভালো মানুষ। আমার নেতা (এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ) যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই জামায়াতে ইসলামির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় এসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, মিডিয়া যদি দর্পণ হয় তাহলে মিডিয়াকে ‘যাহা সত্য তাহাই তুলে ধরতে হবে’।