ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উত্তাল মার্চ

লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

১৭ মার্চ, ১৯৭১। চলমান অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিনে শেখ মুজিবুর রহমান সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। এদিন কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে বৈঠকটি শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলে এ বৈঠক।

প্রথম দিনের মতোই প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা। আলোচনা শেষে শেখ মুজিব সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা শেষ হয়ে যায়নি। তবে আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলোচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে। জনগণকে ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানান তিনি। এদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, পূর্ববাংলা এখন স্বাধীন, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এখন স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, আমার দীর্ঘজীবনে অতীতের সবকটি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। কিন্তু একটি সার্বজনীন দাবিতে জনগণের মধ্যে বর্তমান সময়ের মতো একতা ও সহযোগিতা আমি এর আগে কখনো দেখিনি।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ঢাকায় আসতে আমন্ত্রণ জানান। অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ছাত্রছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানসহ বিভিন্ন এলাকায় কুচকাওয়াজ ও রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন।

এদিন ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে ‘প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ উপলক্ষে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ ওই দিন সকাল ৬টায় সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সকল প্রকার যানবাহনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরী, শহীদানের মাজার জিয়ারত, শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ এবং বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় ছাত্র-জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে। লাহোরে পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরা পৃথক পৃথক বিবৃতিতে ভুট্টোর দুই অংশের দুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেন, সাধারণ নির্বাচন গোটা দেশের জন্য হয়েছে। দুই অংশের জন্য পৃথক নির্বাচন হয়নি। কাজেই জাতীয় পরিষদে একটি মাত্র মেজরিটি পার্টি থাকবে। ভুট্টোর প্রস্তাব পাকিস্তানকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। ভারতের ওপর দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানগামী সকল বিদেশি বিমানের চলাচল নিষিদ্ধ থাকে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানগামী সকল বিমানকে ভারতে একবার অবতরণ করতে বলা হয়। বিদেশি বিমানযোগে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সেনা বহন করে পূর্ব পাকিস্তান নেওয়া রোধ করতে ভারত সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত