কক্সবাজার বাসটার্মিনাল থেকে প্রধান সড়ক ধরে শহরে ঢুকতেই পড়ে বিজিবির আঞ্চলিক কার্যালয়। সেখান থেকে উত্তর দিকে ইট বিছানো এক-দেড়শ’ মিটার এগোলেই দেখা মিলবে মুঘল আমলের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত প্রাচীন মসজিদ সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ। অনন্য কারুকাজে তৈরি এ মসজিদটি স্থানীয়ভাবে এটি গায়েবি বা পোটকা মসজিদ নামেও পরিচিত।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিদের দেয়া তথ্য মতে, প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে সাচি চৌধুরী নামে এক জমিদার এ মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। তবে মসজিদটির সঠিক ইতিহাস কোথাও লিপিবদ্ধ থাকার তথ্য কারো জানা নেই। কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ার নির্জন সুনিবিড় জায়গায় মসজিদটির অবস্থান। এটির উত্তরে বিশাল দীঘি, পূর্বে ও পশ্চিমে কবরস্থান এবং দক্ষিণে চাষাবাদের জমি।
সরেজমিন দেখা যায়, মসজিদটির উপরে একটি বৃহৎ গম্বুজ ও পাশে আরো দুটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজের উপরে পদ্মণ্ডকলস নকশা শোভিত শীর্ষ। গম্বুজের অভ্যন্তরভাগে লতাপাতা ও ফুলের কারুকার্য। মসজিদের ভেতরে পশ্চিম দেয়ালের মাঝখানে রয়েছে একটি মিহরাব। মুসল্লি বাড়ার কারণে মসজিদটি সংস্কার করে সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে জানান মসজিদ কমিটির সদস্য আবদুর শুক্কুর। আবদুর শুক্কুর বলেন, ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। সংস্কার আগের স্থাপত্য ঠিক রেখেই করা হয়েছে। ১২ বছর ধরে এ মসজিদে ইমামতি করেন মাওলানা আলাউদ্দিন। তিনি প্রাচীন এই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতে পেরে গর্বিত। তিনি জানান, দূর-দূরান্ত থেকে এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন মুসল্লিরা। অনেকে বিভিন্ন মানতও করেন বলে জানান তিনি। মুঘল আমলের নির্মাণশৈলীর এই মসজিদটি পর্যটন নগরীর ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত হোক তাই চান স্থানীয়রা। প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন-শিক্ষা, গবেষণা ও পর্যটন বিকাশেও সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মসজিদটির যাতায়াতের রাস্তাটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় স্থানীয়ের আক্ষেপ রয়েছে। স্থানীয় তরুণরা ঐতিহাসিক এই মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করেন।