নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা জোরদার করতে ১৮টি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশেষভাবে ঈদের লম্বা ছুটির কারণে নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই নির্দেশনাগুলো জারি করা হয়েছে। গতকাল ইসির উপসচিব ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়। ইসি কর্মকর্তা জানান, ঈদের কারণে দীর্ঘ ছুটির সময় নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া করার জন্য সব দায়িত্বশীলকে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে শৃঙ্খলাপরিপন্থি হিসেবে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১৮টি দিক হলো
১. নির্বাচন ভবনে সব দর্শনার্থী/সেবাপ্রত্যাশীদের যানবাহনের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা তল্লাশি পূর্বক প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা।
২. নির্বাচন ভবনে আসা সব গাড়ি/কাভার্ডভ্যান প্রবেশ বাহিরের সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা তল্লাশি পূর্বক প্রবেশ/বাহিরের অনুমতি প্রদান করা। ৩. নির্বাচন ভবনে প্রবেশ ও অবস্থানকালীন সময়ে অফিসিয়াল প্রবেশপত্র/পরিচয়পত্র ব্যবহার করে প্রবেশ করতে হবে এবং তা ঝুলিয়ে রাখা নিশ্চিত করা।
৪. ডিউটি পোস্টে দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী, আনসার ব্যাটালিয়ন এবং পুলিশ নির্বাচন ভবনের প্রবেশ/বাহির/সাব-স্টেগইট প্রয়োজন ব্যতীত সার্বক্ষণিকভাবে বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
৫. অফিস সময় শুরুর আগে এবং পরে ও সাপ্তাহিক/সরকারি ছুটির দিনগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে যথাযথভাবে সংশ্লিষ্ট পোস্টসমূহে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নির্বাচন ভবনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৬. কার্ডধারী কর্মকর্তা/কর্মচারী নির্বাচন কমিশন সচিবালয়/দর্শনার্থী/সেবা প্রত্যাশী নির্বাচন ভবনে প্রবেশের পূর্বে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করবেন এবং সাথে বহনকৃত ব্যাগ/বস্তু ব্যাগেজ স্ক্যানারের মাধ্যমে স্ক্যান নিশ্চিত করা।
৭. কার্ডধারী কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ভবনে প্রবেশ ও প্রস্থানকালে ব্যবহার করে সুনির্দিষ্ট গেটের মাধ্যমে ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করা।
৮. দর্শনার্থী/সেবা প্রত্যাশীরা নির্বাচন ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রবেশকারীর তথ্য রেজিস্টার/কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ করে ভিজিটর কার্ড গ্রহণপূর্বক দর্শনীয়ভাবে তা গলায় ঝুলিয়ে গেট দিয়ে প্রবেশ নিশ্চিত করা।
৯. দর্শনার্থী/সেবা প্রত্যাশীরা ভবনের যে তলায় প্রবেশাধিকার পাবেন তিনি শুধুমাত্র সেখানেই যাবেন এবং প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত অবস্থান করবেন। নির্বাচন ভবন ত্যাগ করার পূর্বে ভিজিটর কার্ড ফেরত প্রদান করা নিচশ্চিত করা।
১০. নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, নিরাপত্তা প্রহরী নির্বাচন ভবনের ডিউটি পোস্টে দায়িত্বপালনকালে বিশেষ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতিরেকে ডিউটি পোস্টের বাইরে যাবেন না।
১১. দাপ্তরিক প্রয়োজন ব্যতীত কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী ভবন বা স্বীয় দপ্তরে অতিরিক্ত সময় অবস্থান করবেন না।
১২. ডিউটি পোস্টে দায়িত্বরত অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার না করা;
১৩. নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ভবনের বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস অপচয় রোধে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। এ কারণে লিফট, এসি, লাইট, ফ্যান ইত্যাদি যেন সচল/চলমান না থাকে সেই দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
১৪. নির্বাচন কমিশন সচিবালয়/ফ্লোরে প্রবেশের সময় জুতা পরিষ্কার রাখতে হবে।
১৫. ডিউটিরত অবস্থায় শিষ্টাচার বজায় রেখে চলা, সহকর্মীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, আড্ডা ইত্যাদি দিয়ে অকারণে সময় নষ্ট না করা। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জমাদি/অস্ত্র, ইউনিফর্ম, পরিচয়পত্র পরিহিত অবস্থায় থাকা এবং সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করা।
১৬. অফিসারের সামনে সম্মান জানানো ও বিনয়ী আচরণ করা, সবার সঙ্গে ব্যবহারে বিনয়ী হওয়া ও হাসি মুখে কথা বলা। নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ না করে অফিস কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব সম্পর্কে মনোযোগী হওয়া এর বিষয়ে নিজে শ্রদ্ধাশীল হওয়া ও অপরকে উৎসাহিত করা। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের লিফট ব্যবহার না করে তিনতলা উপরে তিনতলা নিচে ওঠানামা করার ক্ষেত্রে সিঁড়ি যথা সম্ভব ব্যবহার করা।
১৭. পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়নের আবাসন/ক্যাম্পে (সাব-স্টেশনের দ্বিতীয় তলা, ইটিআই ভবনের বেইজমেন্ট-২) এ অবস্থানকালীন সময়ে বিড়ি/সিগারেট/নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ না করা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা, বহিরাগত কাউকে আবাসন/ক্যাম্পে প্রবেশ/অবস্থান করতে না দেয়া; এবং
১৮. নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (নির্বাচন ভবন) এর পরিবেশগত, বৈদ্যুতিক, অগ্নি এবং ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত নিরাপত্তার স্বার্থে উপরে উল্লিখিত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে প্রতি পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করা হলো। নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে না মানলে তা শৃঙ্খলাপরিপন্থি হিসেবে গণ্য হবে এবং শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
