কক্সবাজারের পেকুয়ায় সাঁতারে কুতুবদিয়া চ্যানেল জয় করলেন ১৫ জন সাঁতারু। বঙ্গোপসাগরের খরস্রোতা কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দেশের ১৫ জন কৃতি সাঁতারু। গতকাল কুতুবদিয়া চ্যানেলকে ঘিরে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন তরুণ সাঁতারুরা। ওইদিন বেলা পৌনে ১২টায় মগনামা জেটিঘাট থেকে সাঁতার শুরু করে। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের প্রশস্থ কুতুবদিয়া চ্যানেল অতিক্রম করে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ জেটিঘাট পৌঁছেন প্রথম সাঁতারু হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল। চ্যানেল পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। এ অভিযানের উদ্যোক্তা ছিল বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের ১৫ জন দক্ষ সাঁতারুদের নিয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দেয়ার অভিযানের উদ্যোগ নেন।
তারা মুলত এ অভিযানের মূল স্পন্সর। ওইদিন মগনামা জেটিঘাটের উত্তর পাশে নদীর চর থেকে সাঁতার শুরু করে। এ সময় এ অভিযানকে সার্বিক তদারকি ও সাগর পাড়ি দিতে যেকোন ধরনের প্রতিকূলতা ও ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং এর পক্ষ থেকে কুতুবদিয়া চ্যানেলে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। ৭টি নৌযান এ সাঁতার অভিযানে পর্যবক্ষণে নিয়োজিত ছিল। বিশেষ করে গণমাধ্যমকর্মী, বাংলাদেশ দমকল বাহিনীর দক্ষ টিমও এ অভিযানকে সহায়তা করতে কুতুবদিয়া চ্যানেলে অবস্থান সুসংহত করে।
জানা গেছে, কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দেয়া সাঁতারুরা এর আগে আরও দুঃসাহসিক কিছু অভিযানে অংশ নিয়েছিল। বিশেষ করে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া কয়েকজন সাঁতারু এর আগে বাংলা চ্যানেলও (টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন) জয় করেছিল। এ টিমের তৃতীয় সাঁতারু হিসেবে শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে কুতুবদিয়া গিয়ে মাটি ছুঁয়ে নেন আবদুল মতিন। এছাড়া চাঁদপুরের মো. মাহমুদুল হাসান, বগুড়ার জাহেদুল ইসলাম জাহিদ, রাজশাহীর এস এম শাহরিয়ার মাহমুদ, ঢাকার শাহনেওয়াজ বাবু, হবিগঞ্জের আলী রওনক সৌরভ, পাবনার জামিল হাসান, ঢাকার শহিদুল্লাহ প্রান্তিক, নেত্রকোনার হাবিবুর রহমান, শরিয়তপুরের জিহাদ হোসাইন, বরিশালের মো. শরিফ ফয়সাল, ঢাকার নাসির আহমের সৌরভ, দিনাজপুরের শাখাওয়াত হোসাইন সাকিব ও চট্টগ্রামের মো. ফয়সাল জিয়া এ অভিযানে অংশ নেন। এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল বলেন, কুতুবদিয়া চ্যানেল এ প্রথম পাড়ি দিলাম। আসলে এগুলো দুঃসাহসিক অভিযান। আমি এ পর্যন্ত সাতবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছি। দুবার হয়েছি প্রথম। বাংলাদেশ হচ্ছে নদী মাতৃকদেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা এসবের কারণে অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে। সাঁতার না জানার কারণে আমরা অনেকের জীবন বিপন্ন থাকে। আমরা এখান থেকে জানাতে চাই, কোনো কিছু কঠিন নয়। কিন্তু আমাদের সাধনা থাকতে হবে।