ঢাকায় আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশ্লেষকরা বলেছেন, তারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক পর্যায়ে সরকারি পর্যায়ের পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ (এফওসি)-এর পরবর্তী অগ্রগতির জন্য অপেক্ষা করবেন। কারণ, আলোচনায় ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং সম্পদ ভাগাভাগির বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাসসকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব এফওসি’তে তার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।’ তিনি বলেছেন, এফওসি’তে যখন উত্থাপিত বিষয়গুলোর কিছু ফলাফল আসতে পারে এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। বেসরকারি বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (বিইআই) থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পরিচালনাকারী কবির বলেছেন, যেহেতু আলোচনায় পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে এবং যদি ক্ষমা চাওয়াতে একটি পুরোনো ক্ষত দূর করতে পারে, তাহলে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার জন্য ইসলামাবাদের তাতে কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। তিনি বলেছেন, ‘এটা করার জন্য এখনই তাদের উপযুক্ত সময়।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, যদিও ফ্রান্স এবং জাপানের মতো অনেক দেশ অন্যান্য দেশে তাদের নৃশংসতার জন্য ক্ষমা চেয়েছে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু, অজ্ঞাত কারণে পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি। তিনি বলেছেন, ‘সম্পদের ভাগাভাগি’ও একটি বড় বিষয়, যদিও আর্থিক হিসাবের দিক থেকে ঢাকার দাবির চেয়ে এটা যথেষ্ঠ নয় এবং ‘এই সমস্যাগুলো সমাধান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক আরও দ্রুত গতিতে বিকশিত হতে পারে।’
আহমেদ বলেছেন, ‘এটিও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলো তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে দুটি সংশ্লিষ্ট দেশের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত নয়।’ তিনি বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কেবল দুই দেশের জনগণ এবং অর্থনীতির স্বার্থে হওয়া উচিত এবং ‘আমাদের ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের স্বার্থ।’