ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যা করছে তা কোনো যুদ্ধ না, এটা গণহত্যা। নির্বিচারে, নৃশংস উপায়ে এবং ঠান্ডা মাথায় গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে যে গণহত্যা হচ্ছে তার একটি পক্ষ পুঁজিবাদী, যারা ফ্যাসিবাদের রূপ ধারণ করেছে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় শহিদ মিনারে ‘ফিলিস্তিনি সংহতি কমিটি বাংলাদেশ’ আয়োজিত ফিলিস্তিন সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের অকার্যকর উপস্থিতি উল্লেখ করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিবেক বলে আর কিছু পৃথিবীতে অবশিষ্ট নেই। আছে শুধু একদিকে ক্ষমতাবান শোষক, অত্যাচারী আর অন্যদিকে আছে ক্ষমতাহীন অত্যাচারিত। ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানো এখন আর শুধু দেড়শ’ কোটি মুসলমানের দায়িত্ব না বরং সাতশ’ কোটি মানবিক হৃদয়ের দায়িত্ব। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনকে মুছে ফেলতে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। সেখানে যারা মারা যাচ্ছেন তার ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু। শিশুদের মেরে ফেলা হচ্ছে যাতে তারা ভবিষ্যতে ইসরায়েলকে প্রতিরোধ করতে না পারে। যুদ্ধবিরতির সব ধরনের নীতিমালা ভূলুণ্ঠিত করে ইসরায়েল আবার হত্যাযজ্ঞ শুরু করছে। আগে ইসরায়েলের এই হত্যাযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষক ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, এখন সেই পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে চাইলে ভারতের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আবার ভারতের সাম্রাজ্যবাদ রুখতে আমেরিকার কোলে বসা যাবে না। আমেরিকার কোলে উঠলে ভারত আর আমেরিকা দুটোর সাম্রাজ্যই এখানে চলবে। এসময় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধকে ন্যায়সঙ্গত উল্লেখ করে পাঁচটি দাবি তোলার জন্য জনগণকে আহ্বান করে ফিলিস্তিনি সংহতি কমিটি বাংলাদেশ। দাবিগুলো হলো- ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যা অনতিবিলম্বে বন্ধ করা; ইসরায়েলি দখলদারত্ব ও নিয়ন্ত্রণের পরিপূর্ণ অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনের উভয় অংশের মানুষের জানমাল, জীবনজীবিকা, নিরাপত্তা, পরিপূর্ণ মানবাধিকার এবং মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করা; আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন চুক্তি, প্রস্তাব ও শর্ত বা মানদ- অনুযায়ী স্বাধীন ও সার্বভৌম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা; অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন ও পরোক্ষ সব সম্পর্ক ও লেনদেন ছেদ করার স্বচ্ছ ব্যবস্থা নেয়া এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে বাংলাদেশকে ইসলামী সম্মেলন সংস্থা ও জাতিসংঘে দৃঢ় ও স্বচ্ছ ভূমিকা নেয়া এবং ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সারা বিশ্বে ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করে অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করা।