ত্বকের সমস্যা থাকে বছরজুড়েই। তবে শীতে একটু বেশি থাকে। শুষ্ক, তৈলাক্ত, স্বাভাবিক কিংবা মিশ্র ত্বক যে ধরনেরই হোক- সমস্যা হবেই। কারণ একটাই, ত্বকের সবচেয়ে ওপরের যে স্তর, সেই এপিডারমিসে এ সময় পানির পরিমাণ কমে গিয়ে শুষ্কতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি এ সময় পানি খাওয়ার পরিমাণও কমে যায়। ফলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে উঠতে থাকে।
শীতকাল এলেই ত্বকে ব্রণের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি বারে ধুলাবালি ও রোগের সংক্রমণের হার। হাতের কাছে থাকা চন্দন হতে পারে এসব সমস্যার সমাধান। প্রাচীন কাল থেকে রূপচর্চার অন্যতম প্রধান উপাদান এটি।
বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ও সুগন্ধি তৈরিতে চন্দন ব্যবহার করা হয়। কারণ, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে চন্দনের জুড়ি মেলা ভার।
ব্রণ কমাতে : ব্রণের সমস্যার মোক্ষম দাওয়াই চন্দন। চন্দন ত্বকের তেলতেলে ভাব কমিয়ে ব্রণ ও র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা থাকলে, চন্দনের সঙ্গে বিউলির ডাল ও গোলাপজলের প্যাক আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক বেশি তৈলাক্ত হলে স্নানের আগে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে চন্দন গোলাপ জল মিশিয়ে ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। তার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মানসিক চাপ কমাতে : মানসিক চাপ কমাতেও কাজে আসতে পারে চন্দনের তেল। অ্যারোমাথেরাপির অংশ হিসেবে অনেকেই চন্দনের তেল ব্যবহার করেন। মনে করা হয় চন্দনের সুবাস স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমায়।
সংক্রমণ আটকাতে : অনেকেই মনে করেন চন্দন কাঠের তেল রক্তক্ষরণ আটকাতে পারে। এছাড়া, বিভিন্ন ধরনের জীবাণুর সংক্রমণও কমাতেও সাহায্য করতে পারে। তাই পুরুষরা দাড়ি কামানোর পর আফটার শেভ লোশন হিসাবে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।
বলিরেখা দূর করতে : চন্দন অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। মুখের বলিরেখা ও চোখের তলার কালো দাগ কমাতে মহৌষধ হতে পারে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। বয়স ধরে রাখতে বা চোখের তলার কালো দাগ গায়েব করতে চন্দনের সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট মেখে রাখুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কালচে দাগ দূর করার জন্য চন্দনের সঙ্গে নারকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তবে ত্বক খুব স্পর্শকাতর হলে, লেবুর রস ব্যবহার না করাই ভালো।
সংক্রমণ কমাতে : অনেকেই গায়ের ব্যথা, সংক্রমণ বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য চন্দন গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান। তবে বিষয়টি কতটা বিজ্ঞানসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নিয়মিত চন্দন খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। তাছাড়া চন্দন কাঠ দামি জিনিস, তাই বাজারে ভেজাল চন্দন কাঠের কমতি নেই। চন্দন যাতে বিশুদ্ধ হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।