যেসব খাবার যত বেশি সুস্বাদু, সেগুলো তত বেশি অনিরাপদ। তাই সুস্বাদু খাবারের দিকে না ঝুঁকে নিরাপদ ও পরিমিত খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
গতকাল মঙ্গলবার জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকার ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা উপলক্ষ্যে তৈরি করা স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আইন দিয়ে শাসন করে সমাজের কোনো ভালো উন্নয়ন করা যায় বলে আমি মনে করি না। দেশে আইন একটা থাকবেই, তবে এটা বাস্তবায়নে নিজেকে আগে এগিয়ে আসতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বিয়ে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যে খাবার সাজিয়ে দেয়া হয়, সেগুলো অনিরাপদ সেটা আমি বলব না, তবে সেটি খুব স্বাস্থ্যসম্মত তাও বলব না। সেখানে খাবারের অনেক অপচয় হয়, এটা স্বীকার করতে হবে। খাবার অপচয় রোধে সচেতন হতে হবে। মানুষ না খেয়ে মারা যায় না, বরং বেশি খেলেই মৃত্যু হয়। তাই সবাইকে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রেখে নিরাপদ খাদ্য নিরাপদ ও পরিমিত খাবার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে এর প্রসার ঘটে। স্কুলে ক্লাসে যদি নিরাপদ খাদ্য ও মাদক সম্পর্কে ৫ মিনিট ক্লাস নেয়া হয়, মসজিদণ্ডমাদ্রাসায় যদি নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে জানানো হয়, তাহলে সেটি খুবই উপকারে দেবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) জানায়, নির্দেশিকায় খাদ্য বাছাই ও ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এতে কাঁচা খাবার থেকে প্যাকেটজাত খাবার ক্রয়-সংক্রান্ত তথ্য, খাদ্যের মজুত, ফ্রিজে কতক্ষণ খাবার রাখা যাবে, কীভাবে রাখতে হবে, সে তথ্য উল্লেখ রয়েছে। কীভাবে খাবার তৈরি করতে হবে, রান্না করার সঠিক পন্থা, পরিবেশন ও সংরক্ষণসহ সুস্থ থাকার বিভিন্ন নির্দেশিকা দেয়া আছে। সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এই নির্দেশিকার পিডিএফ ফাইলের লিংক পাওয়া যাবে। নির্দেশিকার বইটি এরই মধ্যে ১ লাখ পরিবারকে দেয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতের সহায়তায় এক বছরের মধ্যে আরও ১০ লাখ পরিবারের কাছে নির্দেশিকাটি পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
বিএফএসএ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকারের সভাপতিত্তে আয়োজিত এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন ও বিএফএসএ’র সদস্য মো. রেজাউল করিম।