বাণিজ্য মেলায় ছুটির দিনে উপচেপড়া ভিড়
বেড়েছে বেচাকেনা
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রিয়াজ হোসেন, রূপগঞ্জ
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসরের গত ৫ দিন তেমন দর্শনার্থীদের আনাগোনা আশানুরূপ না হলেও ষষ্ঠ দিন সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বেচাকেনাও বেড়ে আগের চেয়ে অনেকটা বেশি। এতে করে প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে পেয়েছে বাণিজ্য মেলার এ আসরে। তবে মেলায় প্রবেশের প্রধান সড়ক এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে (বাইপাস সড়ক) দুপুর থেকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা স্থায়ী ভেন্যু পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারে শুরু হয়েছে। শুরুর পথ দিন থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা, ঘনকুয়াশা থাকায় ৫ম দিন পর্যন্ত আশানুরূপ দর্শনার্থী তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। সেজন্য অনেকটা হতাশায় পড়েছিল মেলার বিভিন্ন স্টল মালিক, দোকানদার, মেলা গেইট ইজারাদার ও মেলা আয়োজকেরা। তবে ষষ্ঠ দিন শুক্রবার সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধের প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীসহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন পেশার লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে মেলা আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাণিজ্য মেলার যেন প্রানচাঞ্চল্যতা থাকে সেটা ফিরে এসেছে। স্টলগুলোয় কেনাকাটার ধুম লেগেছে। এবারের মেলায় শিশুদের আনন্দ করার জন্য বিভিন্ন রাইটস গুলোতে ছিল অনেক ভিড়। তবে খাবারের দোকানগুলোয় খাবারের নির্ধারিত দাম ম্ল্যূ তালিকা দেয়া হলেও ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে খাদ্যসামগ্রী দোকানদার বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেকারণে অনেক দর্শনার্থীদের মেলা ঘুরে বাইরে গিয়ে খাবার খেতে দেখা গেছে।
এছাড়া উদ্বোধনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন কুড়িল বিশ্বরোড-কাঞ্চন সড়ক পুরোদমে খুলে দেয়া হলেও এরপর থেকে ফের বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মূল সড়ক। যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে শাখা সড়ক দিয়ে। তাছাড়া এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে দুপুর থেবে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হওয়ায় মেলায় আগত দর্শনার্থীরা অনেক ভোগান্তিতে পড়েছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর গুলশান থেকে আসা দর্শনার্থী তামিম আরেফিন বলেন, রাজধানীতে বিগত সময়ে যে মেলা হয়েছিল সেখানকার পরিবেশ ছিল খুব ছোট। পূর্বাচলে স্থায়ী ভেন্যুতে এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেলা বসছে। এখানকার পরিবেশ অনেক প্রানবস্ত ও মনোরম। জায়গাও অনেক বড়। এখানে এসে মন খুলে ঘুরাফেরা ও কেনাকাটা করতে অনেক ভাল লাগছে।
নরসিংদী থেকে আসা দর্শনার্থী শেখ সাদী বলেন, মেলার পরিবেশ অনেকভাল। তবে সড়কে দীর্ঘ যানজট থাকায় এখানে আসতে অনেক সময় লেগেছে। প্রশাসন যদি সড়কে যাতে করে কোন যানজট সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর দিলে অনেকটা ভাল হতো। মেলার মি. বাইট রেস্টুরেন্টের মালিক খোকন বলেন, গত বছর মেলায় খাবার বিক্রির যে তালিকা আমাদের দিয়েছিল মেলা কর্তৃপক্ষ। সেটাই এবার পুনরায় তারা আমাদের দিয়েছেন। এবার সব ধরনের দ্রব্য সামগ্রীর দাম চড়াও। তাছাড়া গত বছরের চেয়ে এবার বেশী দামে দোকান বরাদ্দ পাওয়ায় খাবার সামগ্রী একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মেলা গেইট ইজারা আব্দুল্যাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক ছালাউদ্দিন ভূইয়া বলেন, গত ৫ দিন লোক সমাগত কম হওয়ায় অনেকটা হতাশায় পড়েছিলাম। শুক্রবার লোকসমাগম দেখে অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, শুক্রবার থেকে মেলায় লোকসমাগম বাড়ছে। আশারাখি এ ধারাবাহিকতা থাকবে। সড়কের যানজট নিরশনের জন্য প্রশাসণের সাথে কথা বলেছি। খাবার মূল্য বেশির রাখার বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। সে বিষয়ে আমরা দুই একদিনের মধ্য ব্যবসায়ীদের সাথে বসে নতুন করে মূল্য নির্ধারনের সিদ্ধান্ত নেব।