করোনাভাইরাসের ভিন্ন ভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের জন্য একই ভ্যাকসিন (টিকা) নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আশাবাদী নন বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার সহ উদ্ভাবক সারাহ গিলাবার্ট। তিনি বলেন, আমরা যে ভ্যাকসিন তৈরি করা শুরু করেছি, সেটি নির্দিষ্ট স্পাইক প্রোটিনে কাজ করে। এটি অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে, যাতে ভাইরাসকে অবরুদ্ধ করতে পারে। ভাইরাসকে প্রবেশে বাধা দেয়ার সুযোগ নেই। স্পাইক প্রোটিন বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে বদলায়। সব ভ্যারিয়েন্টের জন্য একই ভ্যাকসিন তৈরি করতে গেলে হয়তো আমাদের মূলে যেতে হবে। আমার কাছে এটি অসম্ভব মনে হয়। এই মুহূর্তে ব্যাপকহারে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দেয়া উচিত বলে মনে করি। গতকাল শুক্রবার ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেশনে দর্শকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সারাহ গিলবার্ট বলেন, আমার কর্মজীবনের শুরুতে স্বাধীনভাবে গবেষণা করতে চাইলেও তখন অর্থায়ন করার মতো কাউকে পাইনি। এটারও একটি কারণ আছে। পিএইচডি করার পরও কারও অধীনে দীর্ঘ সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। তাই আমাকে নিজের অর্থায়ন নিজেরই জোগাড় করতে হয়েছিল। তাই বলবো সফলতা ধীরে ধীরে আসতে পারে। কিন্তু তার মানে এই না যে যাত্রাটি উপভোগ করা যাবে না। এসময় তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জীবনে যখন যেটার প্রতি আগ্রহ থাকবে, যার জন্য কঠিন সাধনা করার ইচ্ছা থাকবে- সেই বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকা উচিত। এমন কোনো বিষয় এটা ভেবে নির্বাচন করা উচিত হবে না যে, এটি পড়ে পাস করলে অনেক টাকা উপার্জন করা যাবে। সেটিই নির্বাচন করবেন, যার প্রতি আপনার অসীম আগ্রহ। সারাহ আরও বলেন, অতীতের সঙ্গে এখন অনেক ফারাক। আগে টেস্ট কিট ছিল না, এখন আছে। পরীক্ষার সময় কমে এসেছে। আমরা এখন চিন্তা ও এনালাইসিস করার জন্য অনেক সময় পাই। অথচ একসময় শুধু পরীক্ষা করতেই অনেক সময় চলে যেত। এসময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গবেষকদের জন্য গবেষণার কাজে ব্যবহৃত উপকরণের জন্য যেন কাস্টমস ব্যবস্থা সহজ করা হয়। আলোচনায় আরও অংশ নেন- পাটের জিন আবিষ্কারক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসিনা খান এবং গবেষক ইয়াসমিন হক।